লেবাননে ভয়াবহ বিস্ফোরণ : দুই বাংলাদেশী শ্রমিক নিহত

0
121
নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ছবি সংগৃহীত

বাংলা খবর ডেস্ক:
বৈরুতের একটি গুদামে প্রায় ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুদ ছিল এবং তাই বিস্ফোরিত হয়েছিল মঙ্গলবার। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের বৈঠকে এ মন্তব্য করেছেন। এদিকে সর্বশেষ প্রতিবেদনে অনুসারে, দেশটিতে বিশাল এই জোড়া বিস্ফোরণে দুই বাংলাদেশী শ্রমিক সহ নিহতের সংখ্যা প্রায় ৮০ জন। আহত অন্তত ৪ হাজার মানুষ। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এক মুখপাত্র জানান, বৈঠকে হাসান দিয়াব বলেছেন, এটি অগ্রহণযোগ্য যে, কোন ধরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া প্রায় ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট একটি গুদামে ছয় বছর ধরে ছিল।

এছাড়া হাসান দিয়াব বলেছেন, এটা মেনে নেওয়ার মত না এবং এই ইস্যুতে আমরা চুপ থাকতে পারি না। যারা এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী তাদের শাস্তি পেতে হবে।

এর আগে লেবাননের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান বলেছেন, অত্যন্ত বিস্ফোরক রাসয়নিক পদার্থের গুদামে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।

তবে ঠিক কী কারণে বিশাল এই বিস্ফোরণ ঘটলো তা সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি বলে খবরে বলা হয়েছে।

এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বুধবার সারাদেশে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। এন ডি টিভি, ফ্রান্স ২৪, সিএনএন

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ সদস্য আহত

ওদিকে আইএসপিআর জানায়, লেবাননের রাজধানী বৈরুত বন্দরের ভয়াবহ বিস্ফোরণে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের একজনের অবস্থা গুরুতর। বিস্ফোরণে নৌবাহিনীর একটি জাহাজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গুরুতর আহত নৌসেনাকে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত মেডিকেল সেন্টারে (এইউবিএমসি) ভর্তি করা হয়েছে।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অধীনে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ‘বিজয়’–এ ছিলেন তাঁরা। আহত অন্যদের ইউনিফিলের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হেলিকপ্টার বা অ্যাম্বুলেন্সে করে হামুদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা শঙ্কামুক্ত। শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আহত নৌসদস্যদের চিকিৎসা চলছে।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, এ দুর্ঘটনায় নৌবাহিনীর জাহাজ বিজয়ের বিস্তারিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নৌবাহিনীর জাহাজ, ইউনিফিল সদর দপ্তর ও বৈরুতে বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে নৌবাহিনী সদর দপ্তরের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ইউনিফিল হেড অব মিশন এবং ফোর্স কমান্ডার ও মেরিটাইম টাস্কফোর্স কমান্ডার সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

বিস্ফোরণের অব্যবহিত পরই বৈরুতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আল মোস্তাহিদুর রহমান সরেজমিনে বানৌজা বিজয় পরিদর্শন করেন এবং আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে স্থানান্তর ও যথাযথ চিকিৎসা প্রদানে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করেন।

২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে আসছে। ভূমধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে বর্তমানে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিজয় ইউনিফিলে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত। জাহাজটি লেবাননের ভূখণ্ডে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি লেবাননি জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি, দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানিজ নৌসদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here