বাংলা খবর ডেস্ক:
নিউইয়র্কে ১০দিন ব্যাপী বিশ্বের প্রথম ভার্চুয়াল বাংলা বইমেলা শুরু হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল১০টায় ২৯তম নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলার উদ্বোধন হয়েছে। মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলার উদ্বোধন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান ও জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম।
কোভিড ১৯ মহামারীতে যখন সারা পৃথিবী স্তব্ধ জাতির জনকেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচকবৃন্দ। উদ্বোধকের পরে ভার্চুয়াল এই বইমেলায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা: দীপু মনি, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর, মঞ্চসারথী আতাউর রহমান, নাট্য ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, নাট্য ব্যক্তিত্ব জামাল উদ্দিন আহমেদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাঁসান ইমাম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক ও কবি কামাল চৌধুরী, বিজ্ঞানী ও মূলধারার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ডঃ নূরুন নবী, আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম শাহ আলম সরোয়ার, সাংবাদিক ও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, লেখক সম্পাদক আবুল হাসনাত, বাচিক শিল্পী ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, বুক সেলারস এন্ড পাবলিশার্স গিল্ড এর সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, সঙ্গীত শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদ, লেখক সাহিত্যিক ডঃ আবদুন নূর, লেখক সাংবাদিক নাজমুন নেসা পিয়ারী, সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ, লেখক সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস, মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা গোলাম ফারুক ভুঁইয়া ও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ফেরদৌস সাজেদিন। এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন শিশু সাহিত্যিক ও সাংবাদিক ফরিদুর রেজা সাগর ও প্রেস ইন্সটিউটের পরিচালক সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ।
মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনকারীদের মধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, জাতির জনকের নিবেদিত মুক্তধারার এই বইমেলা শুধু আমেরিকা নয়, বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর বাঙালিদের অতি প্রিয় অনুষ্ঠান। এই বইমেলালা আরো আরো যুগ যুগ বেঁচে থাকুক। বঙালি সংস্কৃতির বিকাশে মুক্তধারার ফাউন্ডেশনের অবদানের কথা জাতি স্মরণ করবে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত এই বইমেলার মাধ্যমে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন অন্ধকারচ্ছন্ন পৃথিবীতে আলোর রেখা উন্মোচন করে দিয়েছে। ভার্চুয়ালি এই বইমেলা করে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন সারা পৃথিবীর বাঙালিদের একই সূতোয় গেঁথেছেন। আগামি ১০দিন পৃথিবীর বাঙালিরা এই মেলার মাধ্যমে জাতির জনককে স্মরণ করবেন তাঁর লেখা বইগুলো পৃথিবীর সকল মানুষের হাতের কাছে পৌছে গেল। আমি এই মেলার সাফল্য কামনা করি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক ও কবি কামাল চৌধুরী বলেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের জাতির পিতাকে নিবেদিত এই অনুষ্ঠান জাতি দীর্ঘদিন মনে রাখবে। তিনি মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠাতে শুরুতে ২৯তম বইমেলার আহ্বায়ক ডাঃ জিয়াউদ্দীন আহমেদ মুজিব বর্ষে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানাবার নিমিত্তে আমেরিকার ইইনাইটেড পোস্টাল সার্ভিস কর্তৃক বাংলাদেশের জাতির পিতার ছবি সম্বলিত দিয়ে মাসব্যাপী স্মারক ডাকচিহ্ন প্রকাশ, ১৭ মার্চকে আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু দিবস ঘোষণা এবং নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃক ২৫ শে সেপ্টেম্বরকে বাংলাদেশী ইমিগ্রান্ড ডে ঘোষণাসহ গত ৫ বছর ধরে বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরেন।
১ ঘন্টার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাঁসান ইমাম, আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম শাহ আলম সরোয়ার, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, বুক সেলারস এন্ড পাবলিশার্স গিল্ড এর সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় ও সমাপনী বক্তব্য রাখের মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফেরদৌস সাজেদীন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরের পর্বে ছিল আমার বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কবি শঙ্খ ঘোষ এর শ্রদ্ধাঞ্জলি ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তাঁর লেখা অপ্রকাশিত কবিতা। পাঠ করেন ডা: ফারুক আজম। এরপর ছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণের স্মৃতিচারণ ও কবিতা পাঠ। এর সঞ্চালন করেন বিশ্বজিত সাহা। রাত ১০.৪৫ ছিল জাতির জনকের প্রতি নিবেদিত গানের অনুষ্ঠান মৃত্যুহীন প্রাণ। পরিবেশনায় ছিলেন কুমার শিল্পী বিশ্বজিৎ। রাত ১০.৫৫ ছিল জাতির পিতার স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠান বঙ্গবন্ধু, স্মৃতি ও চেতনায়। অংশগ্রহণে ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী ও রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ। সঞ্চালনা: ডঃ নূরুন নবী। বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা রতন সাহার গান শিল্পী হিমাংশু গোস্বামীর কন্ঠে পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ১০দিন্যবাপী বইমেলার প্রথম দিনের সমাপ্তি ঘটে।
বিশ্বের প্রথম বাংলা ভার্চুয়াল বই মেলায় বাংলাদেশের ২১টি ও পশ্চিমবঙ্গের ৪টিসহ মোট ২৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। বইমেলার ১০দিন আন্তর্জাতিক মূল্যের ৫০% হ্রাসকৃত মূল্যে পৃথিবীর সকল দেশের মানুষ বই ক্রয় করতে পারবেন। প্রতিদিনের অনুষ্ঠান সরাসরি দেখার জন্য রয়েছে http://https://www.nyboimela.org এবং https://www.facebook.com/nyboimela। আজ রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে বইমেলার দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান। শিশু-কিশোর মেলার আহ্বায়ক সেমন্তী ওয়াহেদ এর তত্বাবধানে আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ৪র্থ শিশু কিশোর মেলা।