রায়ের প্রত্যায়িত কপি, জামিন আদেশ থেকে শুরু করে কোনো নথিপত্র সংগ্রহ ছাড়াও যে কোনো সেবা পেতে সুপ্রিম কোর্টে ঘুষ না দিলে কোনো কাজ হয় না। কোনো মামলার রায়ের সত্যায়িত কপি পেতে ৩’শ টাকা নির্ধারিত ফি থাকলেও এজন্যে বাড়তি অর্থ দিতে হয়। এ্যাপেক্স কোর্টের বিভিন্ন শাখায় একই অবস্থা। একজন কর্মচারী জানান ঘুষ ছাড়া কোনো কাগজপত্র বের করা প্রায় অসম্ভব। আইনজীবী, তার অধিনস্ত কেউ, অফিস সহকারি এমনকি সেবা গ্রাহককে এধরনের ঘুষ প্রদানে বাধ্য করা হয়। কোনো অভিযোগ দাখিলেও ঘুষ লাগে। এধরনের অভিযোগ দায়ের নামমাত্র নির্ধারিত ফি থাকলেও তা দিলেও কোনো কাজ হয় না।
এডভোকেট জেআর খান রবিন জানান, ঘুষের ওপর নির্ভর করে কিছু বেঞ্চ কর্মকর্তারা কখন মামলার নথিপত্র শুনানির জন্যে তালিকভুক্ত করবেন। প্রায় সব আইনজীবী, তাদের সহকারি ও বিচারপ্রার্থীদের একই অভিযোগ ঘুষ ছাড়া কোনো ফায়দা নেই।
গত ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে। এবং তদন্তের পর ঘুষ রোধে প্রধান বিচারপতির কাছে একটি চিঠিতে দায়ী ব্যক্তিদের তালিকা দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানায়। এ্যাসোসিয়েশনের তদন্তে দেখা যায় স্থগিতাদেশ, আপিল, মামলা, রিট যে কোনো কাজই ঘুষ ছাড়া আগানো সম্ভব নয়। কোনো কাগজ নথিভুক্ত করতে ৫’শ থেকে হাজার টাকা গুণতে হয়। নির্ধারিত ফি ও বার সিলের জন্যে ফি প্রদান করলেই এ কাজ হয়ে যাওয়ার কথা। সরাসরি ঘুষ না চেয়ে কর্মকর্তারা নির্ধারিত দায়িত্ব পালনে বিরত থাকেন এবং অহেতুক গ্রাহককে ২/৩দিন ঘুরাতে থাকেন। এক পর্যায়ে সেবা প্রত্যাশী বাধ্য হয় ঘুষ দিতে।
টিআইবি’র মত অনেক প্রতিষ্ঠান বলে আসছে এধরনের দুর্নীতি রোধে রকেট প্রযুক্তির প্রয়োজন নেই। যারা ঘুষ গ্রহণ করেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই তা দূর করতে যথেষ্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী এডভোকেট খুরশিদ আলম খান এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য না করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা কমিশনে দাখিলের পরামর্শ দেন।