দর্পণ কবীর:
মহাজগতে পৃথিবী নামক গ্রহ থেকে লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে একটি গ্রহে ভাইরাসদের বসবাস। ওখানে পৃথিবীর কোন প্রাণী নেই। হাজার হাজার কোটি কোটি বছর আগে অবশ্য প্রাণী ছিল। সে ইতিহাসে যাচ্ছি না। তো, ধরে নিই গ্রহটির নাম-লালম। এই লালম গ্রহে বিভিন্ন গোত্রে ভাগ হয়ে লক্ষ-কোটি চরিত্রের ভাইরাস বাস করে। এদের নির্দিষ্ট কোন আয়ুস্কাল নেই। এদের বড় হওয়া বা কৈশোর-তারুণ্য বা বৃদ্ধ হওয়ার কিছু নেই। এদের নিজস্ব যা আকার, সেটাই থাকে ধ্বংস হওয়া অব্দি। মৃত্যু কী এরা জানে না, তবে এরা বিলীন হয়। একেক ভাইরাস একেক কারণে বিলীন হয়।
লালম গ্রহে সবচেয়ে বোকা ভাইরাসের নাম লালমিয়া। এর সংখ্যচিহ্ন আছে। লালমিয়া ভাইরাসের সংখ্যাচিহ্ন ০০১-২০১৯। এ ছাড়া রয়েছে শ্রেণীসংখ্যা, যেমন এ, বি, সি, ডি…..। লালমিয়া ভাইরাসের পছন্দের কাজ হচ্ছে প্রাণীর ফুসফুস-হৃৎপিণ্ড। খুব সহজে লালমিয়া যে কোন প্রাণীর শরীরে প্রবেশ এবং দ্রুত বংশ বিস্তার করতে পারে। বংশ বিস্তারে যে কোন জ্যামিতিক গুণনকে হার মানায় এরা। বংশ বিস্তার এবং প্র্রাণ হরণেই এদের আনন্দ। জানা গেল-লালম গ্রহ থেকে ছিটকে পড়েছিল লালমিয়া নামক যে ভাইরাসটি, এটি এখন পৃথিবীতে এসে নাম পেয়েছে-করোনা। এই লালমিয়া ক্যাটাগরী মানে শ্রেণী হচ্ছে- জেড। এরমানে সবচেয়ে নিচু শ্রেণীর ভাইরাস এটি। লালম গ্রহে এই লালমিয়া অর্থাৎকরোনা ভাইরাস বোকা ও দুর্বল বলে বিবেচিত হয়।
বোকা ও দুর্বল ভাইরাসটি এখন পৃথিবীর গল্পবাজ, যুদ্ধবাজ, নানা পদবীধারী, মোল্লা-পুরুত-পাদ্রীসহ সকলকে নাকানী-চুবানী খাওয়াচ্ছে। আর ওর যা কাজ, তাই করছে। করোনা’র সফলতা দেখে লালম গ্রহের আরো ভয়ংকর ভাইরাস মুখ টিপে হেসে একে-অন্যে বলাবলি করছে-মানুষ নিজেদের সর্বশ্রেষ্ঠ জীব দাবি করে আবার কীসব মরণান্ত্র বানিয়ে অহংকারও করে। অথচ আমাদের দুর্বল লালমিয়ার কাছে ওরা কত অসহায়! আমরা পৃথিবীতে নামলে কী হবে-ওরা কি জানে!
(কল্প-গল্প)