রোজই দুটি দোয়েল দেখি
জানালা ঘেঁষে, একটু দূরে
পাই না নাগাল হাত বাড়িয়ে
খাবার দিলেও চায় না ফিরে।
দোয়েলই তো!
হয়ত দোয়েল, নয়ত শালিক
উড়াল ডানায় রোদের ঝিলিক
ঘুঘু কিনা
তাও জানিনা,
ক’জনকে আর যায় বা চেনা!
অন্য কিছুও হতে পারে
কতই বা আর চিনব কারে
চড়ুই ওডে দল বেঁধে সব
বকবকমের ঝাপটা সরব।
ওরা আসে আমার কাছে
আমার ঘরের জানালাপাশে
খুদকণাটা খুঁটিয়ে নিয়ে
হঠাৎ ডানায় ঝাপটা দিয়ে
উড়ে গিয়ে হারায় কোথায়
কোন অসীমে কোথায় পালায়
কোথায় যে যায় নেইকো জানা
দূরের আকাশ তার ঠিকানা।
সেই আকাশেই চেয়ে থাকি
জানালা দিয়ে উদাস দেখি
বদ্ধ জীবন চার দেয়ালে
দরোজাগুলো কুলুপ আঁটা,
রুদ্ধদ্বারের বেষ্টনীতে
মুক্তপ্রাণের আবেগ ছটা।
এমনি করেই কাটছে জীবন
জানালা দিয়ে আকাশ দেখে
শালিক দেখি চড়ুই দেখি,
পায়রা ওড়ার ঝাপটা দেখি
আরো কত পাখির ঝাঁকে
রোজই দুটি দোয়েল দেখি।
পাশাপাশি দুজনাতে
নিবিড়ঘন সঙ্গসুখে
ক্লান্ত রোদের শেষ বেলাতে
চন্চু মেলায় আবেগভরে।
ইচ্ছে করে হাত বাড়িয়ে
ধরে আনি বুকের মাঝে।
একটু পরেই সূর্য ডোবে
উডে পালায় প্রেমিক জুটি
বিষাদ চোখে খুঁজে ফিরি
কোথায় যায় ওই দোয়েল দুটি?
একা বসে জানালাপাশে
জ্বলতে দেখি সাঁঝের আলো
নানা রঙের বর্ণছটায়
নেমে আসে রাতের কালো।
পাই না খুঁজে নিসর্গ আর
শুনি নাতো পাখির গান
আকাশ ছোঁয়া ভবনগুলি
দাঁড়িয়ে থাকে হারিয়ে প্রাণ।
প্রহর গুনি কখন আবার
জাগবে দিনের সেই কাকলি
কখন আবার আসবে ফিরে
শালিক চড়ুই পায়রাগুলি।
কখন আবার আসবে ফিরে
নিত্য দেখা দোয়েল জুটি
কখন তারা ভরিয়ে দেবে
একলা দিনের শূন্যতাটি
নিউইয়র্ক, এপ্রিল ১৮, ২০২০।