নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্যোগ আসে, দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। আর সেই মোকাবিলা করার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। ইনশাল্লাহ, আমরা এ দুর্যোগ থেকে খুব শিগগিরই বেরিয়ে আসতে পারব।
সোমবার (২০ এপ্রিল) গণভবনে দেশব্যাপী করোনাভাইরাস মোকাবিলার কার্যক্রম সমন্বয় করার লক্ষ্যে ভিডিও কনফারেন্স তিনি এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ জেলা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর সঙ্গে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, বিভিন্ন সময় চার দফায় ৪৩টি জেলায় জেলা প্রশাসকদের কার্যালয়ে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগ আসে, দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। আর সেই মোকাবিলা করার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। শুধু আমি সহযোগিতা চাই এই জন্য; এই রোগের প্রাদুর্ভাবটা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে। সেদিকে সকলকে একটু সচেতন থাকা, এটি একান্তভাবে অপরিহার্য।’
‘সেজন্য আমি সবাইকে বলব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে সমস্ত নির্দেশিকা যাচ্ছে সেগুলো আপনারা যথাযথ মেনে নেবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেক জেলায় আমাদের যারা সচিব সচিববৃন্দ আছে, যেহেতু এখন আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো অনেকটা সীমিত হয়ে গেছে। আমি একেকটা জেলায় একজন সচিবের দায়িত্ব দিয়েছি। যে এই ত্রাণ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার কাজগুলো যথাযথভাবে হচ্ছে কি না? তারা সে সমস্ত জেলায় খোঁজখবর নেবেন এবং সেই রিপোর্টটা আমাকে দেবেন।’
‘সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যারা দলীয় লোকজন আছে তাদেরকেও আমার নির্দেশ দেওয়া আছে। দলের পক্ষ থেকে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে দেবে। সেখানে যারা সত্যিকার, যাদের ত্রাণ পাওয়ার কথা তারা যেন পায়, সেই তালিকা পেতে তারা সহযোগিতা করবে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখবে। সেইভাবে যে মানুষটার আসলে প্রয়োজন তার জন্যই দেওয়া, এটাই যেন ঠিকমত তালিকাটা হয় সেই ব্যবস্থাটা নেওয়া। একটা কথা মনে রাখতে হবে, দুর্যোগ আসলেই সেখানে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। সাহসের সঙ্গে সেটি মোকাবিলা করতে হবে। একাত্তর সালের কথা সবাই চিন্তা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়, সমগ্র বাঙালি জাতি জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন তারা সবকিছু ছেড়ে দিয়ে। অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে নেমে পড়েছিলেন। তাদের পোশাক পরিচ্ছেদ কিছুই ছিল না। কোনোমতে খালি পায়ে একেবারে লুঙ্গি পরে মালকোঁচা মেরে হাতে অস্ত্র নিয়ে তারা সেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। কাজেই এইভাবেই কিন্তু মনে সাহস নিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। এবারও এই করোনা ভাইরাস থেকেও সেই সাহস নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এখানে বাঙালিকেও জয়যুক্ত হতে হবে। আর সেই চিন্তাভাবনা নিয়েই সকলকে কাজ করবার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। ইনশাল্লাহ, আমরা এই দুর্যোগ থেকে খুব শিগগিরই বেরিয়ে আসতে পারব।’