পেকুয়ার ইউএনওকে প্রত্যাহার, নতুন ইউএনও নিয়োগ

0
161

নিউজ ডেস্ক: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈকা সাহাদাতকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁর স্থলে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা সিদ্দিকা বেগমকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে সাঈকা সাহাদাতকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে নতুন নিয়োগ করা ইউএনওকে আগামী ৩ মের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

ইউএনও সাঈকা সাহাদাতের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ১৫ টন চাল কেলেংকারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরপরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাঁকে প্রত্যাহার করে নতুন ইউএনও নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও সাঈকা সাহাদাত বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর একটিও সত্য নয়। আমি কারো সঙ্গে কোনো অবৈধ লেনদেনে জড়িত নই। টইটং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৫ টন চাল আত্মসাতের একটি মামলা নিয়েই এখন সবাই আমার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে গেছে।’

সাঈকা সাহাদাত প্রশ্ন করেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ইউএনও হিসেবে থাকলেও এতদিন কেন এসব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়নি?

করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারি বরাদ্দের ১৫ টন চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগে এর আগে পেকুয়ার টইটং ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তিনি পেকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে মামলাটি দায়ের করেন।

আমিনুল ইসলাম জানান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা থেকে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই মানবিক সহায়তা হিসেবে পেকুয়া উপজেলাকে ৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২৫ মেট্রিকটন চাল বিলি করা হয়। বাকি ১৫ মেট্রিক টন চাল গত ৩১ মার্চ টইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর অনুকূলে উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে হতদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ওই চাল টইটং ইউপি চেয়ারম্যান খাদ্য গুদাম থেকে ৬ এপ্রিল উত্তোলন করেন। কিন্তু চালগুলো উত্তোলন করা হলেও তিনি চাল বিতরণের কোনো তথ্য দেননি, মাস্টাররোলসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেননি। চালগুলো কী করেছেন সে বিষয়ে বারবার জানতে চাওয়া হলেও কিছুই না জানিয়ে টইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী পলাতক রয়েছে। যার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের মামলা করা হয়েছে।

মামলার পর এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাঈকা সাহাদাত জানিয়েছিলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

এদিকে মামলার পর গত বুধবার টইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। কিন্তু তাঁকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ইউএনও সাঈকা সাহাদাতকে প্রত্যাহার করা হলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here