করোনা নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত মাসে ২০০০ ডলার নাগরিক সহযোগিতার প্রস্তাব

0
156
করোনায় থমকে যাওয়া নিউইয়র্ক এর ম্যানহাটন। ছবি: আদিল রহমান

ইব্রাহীম চৌধুরী:
করোনাভাইরাস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত করদাতা নাগরিকদের মাসে দুই হাজার ডলারের ফেডারেল সহযোগিতা প্রদানের জন্য ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতারা উদ্যোগ নিয়েছেন। এ নিয়ে একাধিক আইন প্রস্তাব উপস্থাপিত হয়েছে। জনসমর্থনের দিক থেকে এমন দাবি ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠেছে। তবে সিনেটে এমন আইন প্রস্তাব গৃহীত হবে কি না, এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।

প্রস্তাবটির অন্যতম সমর্থক ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট রাও খান্না বলেছেন, সরকার বলেছে ঘরে থাকো। জনগণ ঘরে থেকেছে। এখন সরকারের দায়িত্ব ঘরে থাকা জনগণের মৌলিক ব্যয়ভার নির্বাহ করার। ওয়াশিংটনের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিল’কে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, এ বিষয়টি এমনি এক সহজ হিসাব।

এদিকে দীর্ঘদিন আমেরিকা লকডাউনে থাকার পর সবকিছু একসঙ্গে খুলছে না। নিউইয়র্ক ও নিউজার্সিসহ আমেরিকার বহু এলাকায় ধাপে ধাপে লকডাউন তুলে নেওয়া নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে নীতিনির্ধারকদের। জনগণকে সরকার ঘরে থাকতে বলছে, জনগণ সরকারের নির্দেশ মেনেছে। এখন জনগণকে দেখভালের দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে বলে মনে করে উদারনৈতিক রাজনৈতিক মহল। এর আগের প্রথম দফায় ১২০০ বা ২৪০০ ডলারের নাগরিক সহযোগিতা যথেষ্ট ছিল না। আমেরিকার ৬০ শতাংশ লোক ফেডারেল সরকারের এ সহযোগিতাকে অপর্যাপ্ত মনে করেন।

ইতিমধ্যে আমেরিকায় লাখো মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অনেকেই তাঁদের কাজ আর ফেরত পাবেন না। বহু ক্ষুদ্র ব্যবসা, রিটেইল স্টোর, নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ও সেবা খাত বন্ধ হয়ে পড়বে। অনেক ব্যবসা–বাণিজ্য নতুন অবয়বে শুরু হবে। পুরোনো কর্মীদের অনেকেই আর কাজে ফিরতে পারবেন না বলে শঙ্কা বাড়ছে। এর মধ্যে মাসে দুই হাজার ডলারের নগদ অর্থ বছরব্যাপী বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত করদাতা নাগরিকদের প্রদান করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। এ নিয়ে আসছে সপ্তাহেই কংগ্রেসে আলোচনা করা হবে বলে ডেমোক্রেটদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

এদিকে নিউইয়র্কের হাসপাতালে করোনা সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেছেন, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমলেও দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা এখনো মাথা খারাপ করে দিচ্ছে। আমেরিকার শীর্ষ মহামারি বিশেষজ্ঞ এবং করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের সদস্য অ্যান্থনি ফাউসি নিজেও সহনশীল কোয়ারেন্টিনে আছেন। জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ফাউসি হোয়াইট হাউসের করোনা সংক্রমিত কোনো কম ঝুঁকির একজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন। সতর্কতার জন্য তিনি নিজেও স্বেচ্ছা বিচ্ছিন্নতায় থাকছেন। করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের এমন তিনজন কর্মকর্তা এখন কোয়ারেন্টিনে আছেন। এর মধ্যে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ডও রয়েছেন বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। এর আগে হোয়াইট হাউসের দুজন কর্মকর্তা কোয়ারেন্টিনে গেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে প্রতিদিন করোনার পরীক্ষা করা হচ্ছে।

৯ মে নিউইয়র্কের গভর্নর কুমো সন্দেহজনক সংক্রমণে তৃতীয় এক শিশুর মৃত্যুর সংবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা এ শেষ জিনিসটা নিয়ে কথা বলতে চাই, যখন আমাদের চলছে সীমাহীন দুশ্চিন্তা।’ কুমো বলেন, ৯ মে নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর তালিকায় ২২৬ জনের নাম যুক্ত হয়েছে। রাজ্যে এখন মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৬ হাজার ৭৭১ জন।

সূত্র: প্রথম আলো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here