সাফারি পার্ক

0
233

মোঃ জেহাদ উদ্দিন

শহর নাকি গ্রাম ভালো সবাই যখন তর্কে
আমি তখন বলি চল যাই সাফারি পার্কে।

শুনে সবাই তৈরি হল নিলাম একখান গাড়ি
শহর ছেড়ে গাঁয়ের পথে দিলাম সবাই পাড়ি।

নগর সীমা পেরিয়ে বলি দাও জানালা খুলে
চলুক গাড়ি আমরা খাব মুক্ত বাতাস মিলে।

গোমতী নদী উড়াল দিয়ে পাড়ি দেবার সময়
ঢেউয়ের মাঝে দেখেছিলাম সেই সে বিরহই

উদাস কবি বাজায় বাঁশি আজো যেন সাঁঝে
আজো যেন তাহার কূলে সেই বাঁশরি বাজে।

ময়নামতি ভাটিয়ারী চট্টগ্রাম ছাড়ি
চলছে মোদের গাড়ি আমরা দেখব সাফারি।

কক্সবাজার যাবার আগে আছে চকোরিয়া
তার ডোলহাজারায় আমরা সবে গেলাম থামিয়া।

মস্তবড় পার্ক সেখানে দ্বি-সহস্রাধিক একর-
জায়গা জুড়ে তৈরি হল পশু পাখির ঘর।

মনের সুখে বেড়ায় ঘুরে হাজার পশু পাখি
সেসব দেখে মানুষেরা জুড়ায় তাদের আঁখি।

সেই সাফারি পার্কে আছে সেবক কিছু মানুষ
পশু পাখির সুখে তারা আনন্দে হয় বেহুঁশ।

এমনি কিছু মানুষ নিয়ে আমরা দিলাম পাড়ি
মানবজগত ছেড়ে আমরা হলাম সাফারি।

প্রবেশমুখেই হলুদ কচ্ছপ বামে অজগর
ঘুরছে তারা বৃহৎ খাঁচায় খাঁচাই যেন ঘর।

ন’মাসের এক হাতির ছানা ঘুরছে আনমনে
ডাকতেই এসে যুক্ত হল হেসে মোদের সনে।

হঠাৎ দেখি শতেক বাঁদর নিল মোদের পিছু
কারো কারো বুকে আবার লুকিয়ে আছে কিছু।

অবাক চোখে তাকিয়ে দেখি মা বাঁদরের কোলে
জড়িয়ে আছে শিশু যেমন বৃক্ষে পুষ্প দোলে।

হাতির ছানার গা বুলিয়ে বাঁদর রেখে পিছু
দেখলাম কত পশু পাখি হইয়া উঁচু-নীচু।

পেখম খুলে ময়ুর নাচে উট পাখি তা দেখে ঘুরে
দেশ-বিদেশের পশু পাখি হেথায় আপন নিবাস গড়ে।

ডাঙ্গায় যেমন ব্যঘ্র আছে জলে আছে কুমির
এসব দেখে আমরা তো ভাই আনন্দে সব অধীর।

রিপন ছিল সাথে মোদের সেবক সাফারীর
পশু পাখি তাহার কাছে করে এসে ভিড়।

রহস্য কি জানার লাগি জিজ্ঞাসিনু তারে
হেসে বলে বিষয়টি তো সোজা একেবারে।

তোমরা যদি ভালোবাস পশু পাখিরে
তাহারা কি ভালো তোমায় না বাসিয়া পারে?

এই বলিয়া রিপন সাহেব হাতে দিয়া তালি
“রাসেল! একটু আওয়াজ হবে?” সিংহকে দেয় বলি

রাসেল নামের সিংহ তখন গগনবিদারী
আওয়াজ দিয়ে কাঁপিয়ে দিল আত্মা সবারি।

জলের ধারে গিয়ে রিপন ডাকে “কুমির ভাই
জেগে ওঠো, দেখ মানুষ তোমার বারান্দায়।”

শুনে কুমির জাগিয়ে মাথা চালায় তাহার দেহ
জলের মাঝে চলছে যেন মস্ত কারোর কেহ।

যত ই তারে ক্লান্ত ভাবি আলসে দেখি মোরা
কাজের বেলায় সক্রিয় সে যেন জলের ঘোড়া।

কুমিরগুলো বামে রেখে পথ বাড়ালাম ডানে
হালুম হুলুম বাঘের আওয়াজ আসছে সবার কানে।

রাজকীয় বাঘ আমাদের রাজার মতই চলন
ডোরাকাটা বাঘ আমাদের রাজার মতই গড়ন।

জিরাফ দেখি ছুটে বেড়ায় বিস্তীর্ণ এই সবুজ মাঠে
পশু পাখির জগত এটি তাই তাহারা আছে ঠাঁটে।

বনের মাঝে পশুর সাথে পাখির সাথে সবাই
ঘুরেছিনু সারাদিন ই কী যে হল মজা ই।

এ কোন জগত! সাফারি পার্ক! আমরা রোমাঞ্চিত
পশু পাখির রাজ্য দেখে সবাই বিমোহিত।।

ইচ্ছে করে শহর ছেড়ে থাকি বনগ্রাম
পশু পাখির জগতই হোক আমার নতুন ধাম।
——————-
(কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, ডোলহাজারা, চকোরিয়া।। জুলাই ১৮, ২০২০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here