আইপিএলের জন্য ‘এসওপি’ জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি

0
83

বাংলা খবর ডেস্ক:
আইপিএলের জন্য ‘এসওপি’ (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর) তৈরি করে ফেলেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে যে সব কঠোর নিয়মের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে আট দলের সব সদস্যকে, তাতে চক্ষু কপালে ওঠার জোগাড়।

টসের সময় কাগজে লেখা ক্রিকেটারদের তালিকা আদানপ্রদানের প্রথা তুলে দিয়ে ইলেকট্রনিক টিমলিস্ট চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। টস করতে হবে দূরত্ব বিধি মেনে এবং চিরকালের প্রথা মেনে টসের আগে বা পরে করমর্দনও করা চলবে না। কোনও ম্যাসকট ঢুকতে পারবে না। ডাগ-আউটেও বসতে হবে দূরত্ব বিধি মেনে।

আইপিএলের আট দলের জন্য তৈরি এই ‘এসওপি’ দেখা যাচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে পৌঁছনোর পরে ছ’দিনের সম্পূর্ণ একাকী নিভৃতবাসে থাকতে হবে সব সদস্যকে। এই ছ’দিনে তিন বার করোনা পরীক্ষা হবে সকলের। যত ক্ষণ না তিনটি পরীক্ষার ফলই ‘নেগেটিভ’ আসছে, কেউ নিজেদের হোটেলের ঘর ছেড়ে বেরোতে পারবেন না। এমনকি, একই দলের ক্রিকেটারেরা একে অন্যের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।

ক্রিকেটারদের পরিবার সঙ্গে গেলে একসঙ্গে থাকতে পারবে হোটেলে। তবে টিমবাসে তাঁরা কেউ যেতে পারবেন না। অনুষ্কা শর্মা স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যেতে পারেন। কিন্তু মাঠে নেমে স্বামী বিরাট কোহালির সঙ্গে দেখা করার রাস্তা বন্ধ। দ্বাদশ ব্যক্তি মাঠে জল নিয়ে ঢোকার আগে হাতে স্যানিটাইজ়ার লাগিয়ে নিচ্ছেন, এমন দৃশ্য দেখার জন্যও ক্রিকেটভক্তরা তৈরি থাকুন। প্রত্যেক বিরতিতে ক্রিকেটারদের স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতেও দেখা যাবে। আরও আছে। দলের ফিজিয়ো বা ট্রেনারকে যদি কোনও খেলোয়াড়কে স্পর্শ করে শুশ্রূষা করার দরকার পড়ে, তা হলে তাঁকে ‘পিপিই’ (পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট) কিট পরে আসতে হবে। খেলার সময় ছাড়া সকলকে মাস্ক পরে থাকতে হবে। খেলছেন না এমন সদস্যদের ‘ফেস শিল্ড’ ব্যবহার করার পরামর্শও বলা হয়েছে।

দলের সব সদস্যের কাছে নিজের নাম লেখা জলের বোতল থাকতে হবে। অন্যের জিনিস ব্যবহার করা যাবে না। সাংবাদিকদের মাঠে আসার অনুমতি দেওয়া হলেও সাংবাদিক সম্মেলনে ক্রিকেটারেরা অংশ নেবেন ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে। সশরীরে হাজির হওয়ার এতকালের রীতি বন্ধ।

প্রত্যেক দলের সঙ্গে এক জন ডাক্তার রাখতে হবে। দিন দুই আগে ভারতীয় বোর্ড সব রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাকে একটি ১০০ পাতার ‘এসওপি’ পাঠিয়েছিল। আইপিএল নির্দেশিকাতে তার অনেক কিছুই রয়েছে। যেমন ড্রেসিংরুমে যত পারো কম সময় কাটানো। টিম মিটিং খোলা মাঠে করা। বার বার স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা বা সাবান জলে হাত ধোয়া। গোটা দলকে সরাসরি ম্যাচের পোশাক পরে মাঠে চলে আসতে বলা। যাতে ড্রেসিংরুমে কম সময় ব্যয় হয়। ড্রেসিংরুমে ঢুকলেও দূরত্ব বিধি মেনে বসার কথা বলা হয়েছে।

আটটি দলকে আলাদা আলাদা হোটেলে থাকতে বলা হয়েছে। ভারত থেকে চার্টার্ড বিমানে আমিরশাহি যেতে বলা হয়েছে। পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ছোট হোটেলে থাকার। যাতে সেই হোটেলে শুধুমাত্র ওই আইপিএল দলের সদস্যরাই থাকতে পারেন এবং অন্য অতিথিদের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা কম থাকে। একান্তই যদি বড় হোটেলে থাকতে হয়, তা হলে সম্পূর্ণ আলাদা অংশে থাকার কথা বলা হয়েছে। হোটেলে অন্য অতিথিদের মধ্যে গিয়ে প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশভোজ করা যাবে না। নিজেদের ঘরে বসেই খাবার খেতে হবে।

আমিরশাহি রওনা হওয়ার আগে প্রত্যেক ভারতীয় ক্রিকেটারকে তাঁর দলের শহরে উপস্থিত হয়ে ১৪ দিনের নিভৃতবাসে থাকতে হবে। দেশি, বিদেশি সবাইকে দু’টি ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট নিয়ে আমিরশাহিতে আসতে হবে। আইপিএলে নতুন সংযোজন মেডিক্যাল ম্যানেজার। দলের সঙ্গে যাঁরা যাবেন, ১ মার্চ থেকে অগস্ট পর্যন্ত শারীরিক ইতিহাস জানাতে হবে মেডিক্যাল ম্যানেজারকে।

জোফ্রা আর্চারের মতো জৈব সুরক্ষা বলয়ের নিয়ম কেউ লঙ্ঘন করলে ফের নিভৃতবাসের শৃঙ্খল এবং একাধিক বার করোনা পরীক্ষা করিয়ে ‘নেগেটিভ’ ফল নিয়ে তাঁকে ফিরতে হবে। দলের মালিকদেরও এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়া হবে না। ‘এসওপি’-তে আলাদা করে মালিকদের কথা বলে দেওয়া হয়েছে মানেই পরিষ্কার বার্তা দিয়ে রাখা, কেউ নিয়মের ঊর্ধ্বে নও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here