দেশে করোনা: মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩ হাজার ৯’শ

0
145

বাংলা খবর ডেস্ক:
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৯০৭ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন যে ৪৬ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৬ এবং নারী ১০ জন। এখন পর্যন্ত মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৮২ জন বা ৭৮.৮৮ শতাংশ এবং নারী ৮২৫ জন বা ২১.১২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১.৩৪ শতাংশ।

এছাড়া, নতুন করে ২ হাজার ২৬৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৬২৫ জনে।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত স্বাস্থ্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, করোনা শনাক্তের জন্য দেশের সরকারি ও বেসরকারি ৯১টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১০ হাজার ৫৯৫টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে আগের নমুনাসহ ১১ হাজার ৩৫৬টি। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৫৫টি।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯.৯৫ শতাংশ। আর মোট পরীক্ষার ক্ষেত্রে শনাক্ত হয়েছেন ২০.৪৪ শতাংশ।

এদিকে, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ৯৫২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৭ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার এখন পর্যন্ত ৫৬ শতাংশ।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

বিশ্ব পরিস্থিতি :

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সিস্টেমস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তথ্য অনুসারে শনিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার ২৩৮ জন। সেই সাথে ভাইরাসটির কারণে সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

তথ্য আরও দেখা যায় যে ভাইরাসের কবল থেকে ইতোমধ্যে সেরে উঠেছেন ১ কোটি ৪৬ লাখের অধিক মানুষ।

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৫৬ লাখ ২১ হাজার ৩৫ জন এবং তাদের মধ্যে মারা গেছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৪৩ জন, খবর সিনহুয়া।

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রই করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে, ভারতে শুক্রবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৮৪৯ জন। দেশটিতে রয়েছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। সেখানে মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে শনাক্ত হয়েছেন ২৯ লাখের অধিক রোগী।

দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। সেখানে নিশ্চিতভাবে ৩৫ লাখ ৩২ হাজার ৩৩০ জন আক্রান্ত এবং ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৫৮ জন মারা গেছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সঙ্কটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

দু’বছরের মধ্যে বিদায় নেবে করোনা- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা:

ওদিকে দু’ বছরের মধ্যে করোনা ভাইরাস মহামারি বিদায় নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস। শুক্রবার জেনেভাতে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এর আগে ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু বিদায় নিয়েছিল দু’বছরে। এখন যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি তা ব্যবহার করে অল্প সময়ের মধ্যে এই ভাইরাসকে থামিয়ে দিতে সক্ষম হবে বিশ্ব। তবে অবশ্যই এখনও এই ভাইরাস আরো গতি নিয়ে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে। একই সময়ে আমাদের কাছে এমন প্রযুক্তি ও জ্ঞান আছে, যা দিয়ে আমরা একে থামিয়ে দিতে পারবো। এক্ষেত্রে তিনি জাতীয় ঐক্য ও বৈশ্বিক সংহতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

উল্লেখ্য, ১৯১৮ সালে যে ভয়াবহ স্প্যানিশ ফ্লু দেখা দেয় তাতে কমপক্ষে ৫ কোটি মানুষ মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মারা গেছেন প্রায় ৮ লাখ মানুষ। আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ২৭ লাখেরও বেশি। শুক্রবারের আলোচনায় করোনা মহামারিকালে পিপিই সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দুর্নীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কর্মকান্ডে জড়িতদের ‘ক্রিমিনাল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি। বলেন, কোনো ধরনের দুর্নীতিই গ্রহণযোগ্য নয়। আমার কাছে পিপিই নিয়ে দুর্নীতি হলো হত্যাকান্ডের সমান। কারণ, যদি স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই ছাড়া তাদের কাজ করেন, তাহলে তাদের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। একই সঙ্গে তারা যেসব মানুষকে সেবা দেবেন, তাদের জীবনও ঝুঁকিতে পড়বে।
পিপিই নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশে দুর্নীতি হয়েছে। শুক্রবার করোনাকালে ঘুষ, দুর্নীতির প্রতিবাদে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। শহরের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বকেয়া বেতন ও সুরক্ষা সামগ্রীর সঙ্কিেটর কারণে ধর্মঘট করছেন। একই দিনে হু’র জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রধান ড. মাইক রায়ান সতর্কতা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মেক্সিকোতে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। তিনি বলেন, মেক্সিকোতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় তিনজনকে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১৫০ জনের এই পরীক্ষা করানো হয়েছে। বিশ্বের মধ্যে এখন মৃত্যুর দিক দিয়ে মেক্সিকো তৃতীয় অবস্থানে। সেখানে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে হস্তক্ষেপ করছেন তার সমালোচনা করেছেন ডেমোক্রেট দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী জো বাইডেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জাতির প্রতি সবচেয়ে বড় মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আমাদেরকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আমেরিকাকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। যদি নির্বাচিত হন তাহলে জাতীয়ভাবে মুখে মাস্ক পড়ার রীতি চালু করার প্রত্যয় ঘোষণা করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here