বছরের প্রথম দিনে ৯২৩৬ শিশুর জন্ম

0
96

বাংলা খবর ডেস্ক:
বরিশাল মেডিকেলের শিক্ষার্থী ছিলেন আসিফ চৌধুরী। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন বুশরা জাহান। ভালোবাসার সম্পর্কটা পারিবারিকভাবে রূপ নেয় বৈবাহিক জীবনে। সাজানো-গোছানো সংসার। থাকেন তারা রংপুরে। হাসিখুশি সুখী পরিবার। বিয়ের তিন বছরের মাথায় বুশরার কোল আলো করে আসে ছোট্ট পরী। তার নাম রাখেন আমিকা চৌধুরী।
আমিকার জন্ম বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ২০২১ সালের পহেলা জানুয়ারি।
বুশরার প্রথম সন্তান পহেলা জানুয়ারিতে হওয়ার কথা ছিল না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বুশরার অস্ত্রোপচার করা হবে ৩রা জানুয়ারি। কিন্তু বিশেষ এই দিনটিতে সন্তান জন্মদানের জন্য এগিয়ে আনেন তারিখ। বুশরা বলেন, আমার মেয়ের জন্মদিনে শুধু আমরা না গোটা বিশ্ব উদযাপন করবে। এটাই চাওয়া ছিল। আমিকার বাবা ডা. আসিফ চৌধুরী বলেন, প্রথমত দেখলাম সিজারের ডেটটা এগিয়ে আনলে কোনো সমস্যা হয় কিনা। পরে বিশ্লেষণ করে দেখলাম কোনো শারীরিক জটিলতা নেই। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম বছরের প্রথম দিনেই জন্ম হোক যেহেতু কোনো সমস্যা নেই। আল্লাহ্‌র রহমত মা- মেয়ে সুস্থ আছেন।
বাংলাদেশে আমিকাসহ প্রথম দিনে জন্ম নিয়েছে ৯ হাজার ২৩৬ শিশু। আর বিশ্বজুড়ে প্রথম দিনে ভুমিষ্ট হয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৪ শিশু। এই তথ্য দিয়েছে ইউনাইটেড নেশন চিলড্রেনস ফান্ড (ইউনিসেফ)। শুক্রবার ইউনিসেফ আরো জানায়, ২০২১ সালে গোটা বিশ্বে ১৪ কোটি নবজাতক জন্ম নিতে পারে।
ইউনিসেফ’র তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৮ হাজারের বেশি শিশু জন্ম নেয়। সেই হিসাবে পহেলা জানুয়ারি প্রায় এক হাজার শিশু বেশি জন্মগ্রহণ করেছে।
ইউনিসেফ আরো জানায়, ২০২১ সালের প্রথম নবজাতক জন্মগ্রহণ করেছে প্রশান্ত মহাসাগরের কোলে থাকা ফিজি দ্বীপপুঞ্জে। আর প্রথম দিনের হিসাবে শেষ শিশুটির জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। গোটা বিশ্বে মোট যত শিশু জন্ম নিচ্ছে, তার অর্ধেকই মাত্র ১০ দেশে। যে তালিকায় সবার উপরে রয়েছে ভারত। পহেলা জানুয়ারি ভারতে ৫৯ হাজার ৯৯৫ নবজাতক জন্ম নিয়েছে। এরপর যথাক্রমে চীনে ৩৫ হাজার ৬১৫, নাইজেরিয়ায় ২১ হাজার ৪৩৯, পাকিস্তানে ১৪ হাজার ১৬১, ইন্দোনেশিয়ায় ১২ হাজার ৩৩৬, ইথিওপিয়ায় ১২ হাজার ছয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ হাজার ৩১২, মিশরে নয় হাজার ৪৫৫ ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে আট হাজার ৬৪০ শিশুর জন্ম হয়েছে।
ইউনিসেফ’র একজিকিউটিভ ডিরেক্টর হেনরিটা ফোরে বলেন, নতুন সম্ভাবনার বিশ্বে পা রাখার সুযোগ নিয়ে পৃথিবীতে এলো তিন দশমিক ৭১ লাখ নবজাতক। মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে নতুন এক পৃথিবী গঠনের স্বপ্ন দেখছে গোটা বিশ্ব। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক হয়ে উঠুক নববর্ষের নবজাতকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের গাইনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফাহমিদা আক্তার বলেন, অনেক সময় দেখা যায় বাবা-মা, ভাই-বোনের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী দিন মিলিয়ে অনেকে সিজার করতে চান। আবার সেইসঙ্গে পহেলা বৈশাখ, পহেলা জানুয়ারি, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন বিশেষ দিনে সন্তানের জন্মদানে আগ্রহী হন বাবা-মায়েরা। আমরা এসব ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত অ্যালাউ করি। আমরা নিশ্চিত হই মা কিংবা সন্তানের ক্ষতি হবে না। আবার অনেক সময় একই কারণে দুই থেকে তিনদিন পিছিয়েও দেয়া হয় জন্মদানের তারিখ। তিনি আরো বলেন, এই রীতিটি দিনদিন বাড়ছে। সূত্র:মানবজমিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here