অবশেষে ক্ষমতা হস্তান্তরে সম্মত হলেন ট্রাম্প

0
133

বাংলা খবর ডেস্ক:
নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে সম্মত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিজয়কে যৌথ অধিবেশনে স্বীকৃতি দেয় মার্কিন কংগ্রেস। আগামী ২০ জানুয়ারি তার শপথ নেয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা রইল না।

বিবিসি ও বার্তা সংস্থা এএফপির এ খবর জানিয়েছে। এছাড়া স্বেচ্ছায় হোয়াইট হাউস ছাড়ার সরাসরি ঘোষণা দেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেন, জো বাইডেনের কাছে সুশৃঙ্খলভাবেই ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। নির্বাচনের ফল নিয়ে যদিও আমার সম্পূর্ণ দ্বিমত রয়েছে এবং ঘটনাবলীও আমাকে সমর্থন করছে; তথাপি আগামী ২০ জানুয়ারি সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।

কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকভাবে বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর এক বিবৃতিতে তিনি এমন দাবি করেন।

২০২৪ সালের নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আভাস দিয়ে তিনি বলেন, প্রেসিডেনশিয়াল ইতিহাসে প্রথম মেয়াদের অবসানেরই প্রতিনিধিত্ব করছে; তবে ‘আমেরিকাকে ফের মহান করার’ লড়াইয়ের এটা কেবল শুরু।

জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি কংগ্রেসের:

এরআগে মার্কিন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বিজয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে দেশটির কংগ্রেস। বিবিসির খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।

পেনসিলভ্যানিয়া ও অ্যারিজোনার ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে রিপাবলিকান দলের কয়েক সিনেট সদস্যের আপত্তিকে উড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে এই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

বুধবার ট্রাম্প সমর্থকেরা ক্যাপিটল হিলে হামলা ও ভাঙচুর চালালে প্রত্যয়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু যৌথ অধিবেশন ফের শুরু করে বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

WASHINGTON, DC – JANUARY 07: Vice President Mike Pence (L) and U.S. Speaker of the House Nancy Pelosi (D-CA) look on as the the count of electoral votes continues in the House Chamber during a reconvening of a joint session of Congress on January 07, 2021 in Washington, DC. Members of Congress returned to the House Chamber after being evacuated when protesters stormed the Capitol and disrupted a joint session to ratify President-elect Joe Biden’s 306-232 Electoral College win over President Donald Trump. Win McNamee/Getty Images/AFP
== FOR NEWSPAPERS, INTERNET, TELCOS & TELEVISION USE ONLY ==

ছবি: সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় উল্টে দেওয়ার চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের পর হামলা শুরু হয়।

হামলাকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত ক্যাপিটল ভবন কার্যত দখল করে নিলে অধিবেশন মুলতবি করতে বাধ্য হয় কংগ্রেস।

পুলিশ পাহারা দিয়ে আইনপ্রণেতাদের সরিয়ে নেয়া হয় আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলে। যৌথ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করা ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকেও পাহারা দিয়ে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের নেয় পুলিশ।

ক্যাপিটলকে ট্রাম্প সমর্থকদের দখলমুক্ত করতে পুলিশ অভিযান শুরু করে। পরের তিন ঘণ্টায় হলওয়েগুলো দিয়ে ট্রাম্প সমর্থকদের ছোটাছুটি ও বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে খোঁজাখুঁজি, হাঙ্গামা-বিশৃঙ্খলায় এক নজিরবিহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

সহিংসতার মধ্যে গুলিতে একজন নারী নিহত হন। পরে আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর জানায় ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ। এফবিআই জানায়, তারা দুটি সম্ভাব্য বিস্ফোরক ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করেছে।

‘উন্মাদ’ ঘোষণা করে ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘উন্মাদ’ ঘোষণা করে তাঁকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পোল্যান্ডের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদেক সিকোরস্কি। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পার্লামেন্টে ইইউ-যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের প্রধান। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা ভবন বা ক্যাপিটলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলার পর এই টুইট বার্তায় এ আহ্বান জানান সিকোরস্কি। আর ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী ব্যবহার করার জন্য দেশটির কেবিনেটের প্রতি আহ্বান জানান পোলান্ডের এই রাজনীতিক। তবে শুধু সিকোরস্কিই নন, ২৫তম সংশোধনী ব্যবহার করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার কথা উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই। বিবিসির এক প্রতিবেদনে সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন উল্লেখ করে বলা হয়েছে, মার্কিন কেবিনেটের মধ্যে ২৫তম সংশোধনীর প্রয়োগের কথা আলোচিত হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো ২৫তম সংশোধনী কী?

মার্কিন সংবিধানের এই সংশোধনী অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট যদি তাঁর কার্যক্রম পরিচালনায় অসমর্থ বিবেচিত হন, তবে নতুন কাউকে সেই দায়িত্ব দেওয়া যায়। তবে এ জন্য কেবিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সেরও সম্মতির দরকার হবে। তাঁরা কংগ্রেসের কাছে এই মর্মে চিঠি লিখবেন যে পেন্স ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হবেন। কারণ, ট্রাম্প এ দায়িত্ব পালনে অসমর্থ।

মার্কিন সংবিধানে এ সংশোধনী আনা হয় ১৯৬৭ সালে। তবে এর প্রয়োগ এযাবৎ হয়নি।

আর ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সের কাছে এমন কোনো আবেদনও এখন পর্যন্ত উপস্থাপন করা হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কেউ কেউ ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগের জন্য পেন্সের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ম্যানুফ্যাকচারার্সের প্রধান, এনএএসিপির প্রধান এবং ভেরমন্টের রিপাবলিকান গভর্নর।

ওদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেশটির অনেক আইনপ্রণেতা সন্ত্রাসবাদে প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছেন। ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরানোর সম্ভাব্যতা নিয়ে খোদ তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরাই আলোচনা করছেন। দেশটির তিনটি নিউজ চ্যানেলের খবরের বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানায়।

মার্কিন কংগ্রেস ভবন ঘিরে বুধবার ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলা-সংঘাত-সংঘর্ষের পর তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাঁকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন।

মন্ত্রিসভার সংশ্লিষ্ট সদস্যদের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর প্রসঙ্গ উঠে আসে।

মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট যদি তাঁর ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলে বিবেচিত হন, তাহলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাঁকে অপসারণ করতে পারেন। এ প্রক্রিয়ায় ভাইস প্রেসিডেন্টকে নেতৃত্ব দিতে হয়।

নাম প্রকাশ না করা একাধিক রিপাবলিকান নেতার উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন বলেছে, মন্ত্রিসভার সদস্যরা সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁরা ট্রাম্পকে ‘নিয়ন্ত্রণহীন’ বলে বর্ণনা করেছেন।

সিবিএস চ্যানেলের সাংবাদিক মার্গারেট ব্রেনান জানিয়েছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সের কাছে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত অবশ্য আনুষ্ঠানিক কিছু উপস্থাপন করা হয়নি।

এবিসির প্রতিবেদক ক্যাথরিন ফাল্ডার্স জানিয়েছেন, একাধিক সূত্র তাঁকে বলেছে, নজিরবিহীন এ পদক্ষেপের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ নেওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি আছে। তার আগেই ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়টি ওয়াশিংটনে আলোচিত হচ্ছে।

একাধিক ডেমোক্রেটিক আইনপ্রণেতাও সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রতিনিধি পরিষদের বিচারসংক্রান্ত কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যরা ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন। সেই চিঠিতে তাঁরা ট্রাম্পকে সরানোর উদ্যোগ নিতে পেন্সের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

অনেক আইনপ্রণেতা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের একজন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট সদস্য ক্যাথলিন রাইস। তিনি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ক্যাপিটলে অভ্যন্তরীণভাবে সন্ত্রাসী হামলার জন্য প্ররোচিত করেছেন। তিনি আমাদের গণতন্ত্রের জন্য এক আসন্ন হুমকি। তাঁকে অবিলম্বে পদ থেকে অপসারণ করা দরকার। মন্ত্রিসভার অবশ্যই ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করা দরকার।’

গতকাল বুধবার ট্রাম্পের শত শত উগ্র সমর্থক ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায়। জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যয়নে এ সময় কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলছিল। নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজিত হওয়ার ফল পাল্টে দেওয়ার লক্ষ্যে এ হামলা চালানো হয়।

ক্যাপিটল ভবনে হামলা-সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় নিহত ৪, ওয়াশিংটন ডিসিতে কারফিউ:

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ক্যাপিটল ভবনে হামলা-সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনার চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এদিকে এ ঘটনার পর রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশ জানায়, ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনার চারজন নিহত হয়েছেন। একজন নিহত হয়েছেন পুলিশের গুলিতে। অন্য তিনজনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।

পুলিশের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, ক্যাপিটল ভবন ঘিরে হামলা-সংঘাত-সংঘর্ষ চলাকালে যে ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, তিনি একজন নারী।

বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, ওই নারী ক্যাপিটল ভবনের ভেতরেই নিহত হন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি বলেছে, ওই নারী মার্কিন বিমানবাহিনীর সাবেক এক কর্মকর্তা। সান দিয়াগোর বাসিন্দা ওই নারীর নাম অ্যাশলি ব্যাবিট।


ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশ জানায়, তারা ৫২ জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্য ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কারফিউ ভঙ্গের অভিযোগে।

গতকাল বুধবার ট্রাম্পের শত শত উগ্র সমর্থক ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায়। জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যয়নে এ সময় কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলছিল। নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজিত হওয়ার ফল পাল্টে দেওয়ার লক্ষ্যে এই হামলা চালানো হয়।

ক্যাপিটল ভবনে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় অভূতপূর্ব বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মুখে একপর্যায়ে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন স্থগিত করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে পরে ফের অধিবেশন শুরু হয়।

হামলার পর ট্রাম্পের সঙ্গ ছাড়ছেন ঘনিষ্ঠরা:

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা ভবন বা ক্যাপিটল ভবনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলার পর ট্রাম্পের সঙ্গ ছাড়ছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। এ হামলার পর নিন্দার ঝড় উঠেছে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান শিবির–নির্বিশেষে। বিশ্বনেতারাও পিছিয়ে নেই সমালোচনায়।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, হামলার পর ট্রাম্পের সঙ্গ ছাড়ার তালিকায় একেবারে প্রথমেই আছেন হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সারাহ ম্যাথিউস। তিনি বলেছেন, ‘আজ কংগ্রেস হলে যা দেখলাম, তাতে আমি ভীষণভাবে বিরক্ত। আমাদের দেশে ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর প্রয়োজন।’

সারাহ বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনে যুক্ত থাকতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করি। এ সময় যেসব নীতি নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর জন্য আমি গর্বিত।’

সারাহর আগে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ এবং ট্রাম্পের সাবেক প্রেস সচিব স্টেফানি গ্রিসহাম পদত্যাগ করেন। তবে তাঁর পদত্যাগের সঙ্গে ক্যাপিটল ভবনে হামলার কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা নিশ্চিত না।

পদত্যাগের পর স্টেফানি বলেন, ‘হোয়াইট হাউসে কাজের মাধ্যমে এ দেশ সেবার সুযোগ পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করি। মিসেস ট্রাম্প যেভাবে বিভিন্ন জায়গায় শিশুদের সহযোগিতা করেছেন, এর অংশীজন হতে পেরে আমি গর্বিত। এ প্রশাসনের অনেক কাজের সঙ্গে আমি যুক্ত থেকেও গর্ব বোধ করি।’

এদিকে এ হামলার পর সরব হয়েছেন ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির অনেকেই।
রিপাবলিকান পার্টির নেব্রাস্কার সিনেটর বেন সাসে বলেছেন, ‘এটা একটা নোংরা দিন। আমরা আমাদের শিশুদের কখনোই বলতে চাইব না যে যুক্তরাষ্ট্রের সোনালি অতীত আমাদের আছে। কারণ, এটা সত্য না। আমরা এমনটা নই।’

গতকালই জর্জিয়ায় সিনেটের ভোটে হেরে যান রিপাবলিকান প্রার্থী কেলি লয়েফলার। তিনিও সমালোচনায় সরব।

নিন্দা বিশ্বনেতাদের:

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্রবাদী সমর্থকদের হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিশ্বনেতারা বলেছেন, সারা বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বুলি আওড়ানো ট্রাম্প নিজ দেশের গণতন্ত্রকেই ধুলায় মিশিয়েছেন। খবর বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ানের।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেনের জয়কে স্বীকৃতি দিতে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনও নজিরবিহীন ওই ঘটনায় স্থগিত হয়ে গেছে সাময়িকভাবে।

কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে ট্রাম্প-সমর্থকদের চালানো তাণ্ডবকে ‘ভয়াবহ’ ও ‘গণতন্ত্রের ওপর আঘাত’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন অনেক নেতা। তাঁরা শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল টুইটার-ফেসবুক:

প্ররোচনামূলক পোস্ট করার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে ব্লক করে দিয়েছে টুইটার এবং ফেসবুক। সেই সঙ্গে টুইটারের তরফে হুঁশিয়ারিও দিয়ে বলা হয়েছে, ট্রাম্প যদি এ ধরনের টুইট করা থেকে বিরত না হন তা হলে স্থায়ীভাবে তার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করা হবে। খবর সিএনএনের


সাময়িক ভাবে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে টুইটার। এক বিবৃতি জারি করে টুইটার জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসিতে নজিরবিহীন হামলার ঘনটার কথা মাথায় রেখেই ট্রাম্পের টুইটগুলো সরাতে হয়েছে। প্ররোচনামূলক টুইট করেছিলেন ট্রাম্প যা আমাদের সিভিক ইন্টিগ্রিটি পলিসির বিরোধী।

বুধবার ওয়াশিটন ডিসিতে মার্কিন সংসদের নিম্নকক্ষ কংগ্রেসে ভবনে হামলা চালায় ট্রাম্পের কয়েক হাজার সমর্থক। দফায় দফায় পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে এমন হামলার তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্ব জুড়ে।

হামলার পর ফের শুরু অধিবেশন:

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে ডোনাল্ড ট্রাম্প-সমর্থকদের হামলার ঘটনার পর জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যয়নে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন ফের শুরু হয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই জানা গেছে।

হামলার ঘটনা নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসি’র মেয়র বাউজার কিছুক্ষণ আগে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি জানান, হাউসে রুমে অধিবেশন চলাকালে কয়েকজন জোরপূর্বক প্রবেশ করে। ওই দলটির সদস্য ছিলেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া নারী। দলটিকে সাদা পোশাকের কয়েকজন কর্মকর্তা বাধা দেন এবং অফিসারদের একজনের গুলিতে নারী মারা যান।

এই ঘটনায় নিহত হন আরো তিনজন। তাদের মধ্যে একজন নারী ও দুই জন পুরুষ বলে জানান তিনি। এছাড়া মেট্রো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের অন্তত ১৪ জন সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ক্যাপিটলে হামলা নিয়ে ওবামা, বুশ, ক্লিনটন, জিমি’র প্রতিক্রিয়া:

যুক্তরাষ্ট্রের চার সাবেক জীবিত প্রেসিডেন্ট- বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন এবং জিমি কার্টার ক্যাপিটালে হামলা চালানো ট্রাম্প সমর্থক দাঙ্গাকারীদের নিয়ে মুখ খুলেছেন। বিবৃতি দিয়ে তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

ওবামা বলেন, ইতিহাসে আজকের ঘটনা আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত অসম্মান ও লজ্জার মুহূর্ত হিসেবে লেখা থাকবে, যে ঘটনা একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট দ্বারা উজ্জীবিত হয়ে ঘটানো হয়েছে, যিনি একটি বৈধ নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে ভিত্তিহীনভাবে মিথ্যা বলে চলেছেন। তবে এমন ঘটনা যদি অপ্রত্যাশিত বলে মনে করা হয় তবে তা হবে নিজেদের সাথেই মজা করা।

বুশ বলেন, কেবল ‘ব্যানানা রিপাবলিক’ দেশগুলোতেই নির্বাচনের ফলকে এভাবে বিতর্কিত করা হয়- আমাদের মতো গণতান্ত্রিক দেশে নয়।

ট্রাম্প দেশলাইয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন উল্লেখ করে ক্লিনটন বলেন, এগুলোর জ্বালানি ছিল চার বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা নোংরা রাজনীতি যখন ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল, আমাদের ‘সিস্টেম’ এ অবিশ্বাসের বীজ বপন করা হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রে একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয়েছিল।

ঘটনাকে ‘ন্যাশনাল ট্র্যাজেডি’ আখ্যা দিয়ে জিমি বলেন, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, এটা আমাদের জাতির সামগ্রিক প্রতিনিধিত্ব করে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here