বাংলা খবর ডেস্ক:
করোনা মহামারির মতো বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশে আইন পাস হয়েছে জাতীয় সংসদ। এসএসসি ও জেএসসির পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এইচএসএসসি পরীক্ষার ফল দিতে পাস করা হয়েছে আইনটি।
আজ রবিবার (২৪ জানুয়ারি) ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
আইনটি পাসের সময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিলটি পাসের পর প্রজ্ঞাপন করতে দুই দিন সময় লাগবে। এরপরই আমরা দ্রুত ফল প্রকাশ করব।’
গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সংসদে এ সম্পর্কিত তিনটি প্রতিবেদন উত্থাপন করেন সংসদীয় কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ ও ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল- ২০২১’ পাসের জন্য কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মত সুপারিশ করা হয়েছে বলে সংসদকে জানান।
তার আগে গত ১৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বিল তিনটি উত্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরে বিল তিনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। ওই দিনই সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়।
গত বছরের পহেলা এপ্রিল থেকে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সরকার পরীক্ষা ছাড়াই মূল্যায়নের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমান শ্রেণির ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পরীক্ষা ছাড়া ফল প্রকাশে আইনি জটিলতা দেখা দেওয়ায় সরকার আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়।
বিল তিনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়, প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতে অতিমারি, মহামারি, দৈব দুর্বিপাকের কারণে বা সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত কোনও অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনও পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করে ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশাবলী জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।
নিয়মিত ক্লাস হবে দশম ও দ্বাদশে, বাকিদের সপ্তাহে ১ দিন:
ওদিকে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্লাস শুরু হচ্ছে শিগগিরই। বাকিদের আপাতত সপ্তাহে এক দিন করে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে হবে।
এই তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। রোববার জাতীয় সংসদে পরীক্ষা ছাড়াই উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের বিল পাস হওয়ার পর দেওয়া বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর এখন শুধুমাত্র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস হবে। বাকিরা সপ্তাহে এক দিন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্লাস করবে।
তিনি বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে ক্লাসে আসবে। পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার একদিন আসবে।