টেস্টে ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

0
92

বাংলা খবর ডেস্ক:
বাংলাদেশ সফরের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন দল ঘোষণা করে তখন দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে কিছুটা হতাশা ছিল। অনেকটা ‘দ্বিতীয়’ সারির দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসা ক্যারিবীয়রা ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। তবে টেস্টে ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চট্টগ্রাম টেস্টে ৩৯৫ রান তাড়া করে সফরকারীরা রেকর্ড গড়া জয় পেয়েছে ৩ উইকেটে। অথচ প্রথম চারদিন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের হাতেই। বাংলাদেশকে একাই হারিয়ে দিয়েছেন কাইল মেয়ার্স। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৪৩০ রানের জবাবে ২৫৯ রান করে উইন্ডিজ। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ২২৩ রানে বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করলে ৩৯৫ রানের লক্ষ্য পায় ক্যারিবিয়ানরা।
রোমাঞ্চ ছড়ানো পঞ্চম দিনে অভিষিক্ত কাইল মেয়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়া জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্ট ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতলো ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল। এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডও এটি।

ঘরের মাঠে শেষ ইনিংসে সর্বোচ্চ (৩৯৫) রানের লক্ষ্য দিয়ে হারের রেকর্ড এটা। এর আগে ২০০৮ সালে চট্টগ্রামেই নিউজিল্যান্ডকে ৩১৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে ৩ উইকেটে হারে বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রোববার শেষ দিনে বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে বাজে ফিল্ডিং। একের পর এক ক্যাচ মিস, রান আউটের সুযোগ কাজে লাগাতে না পারার ব্যর্থতার সঙ্গে দিতে হয়েছে রিভিউ না নেয়ার মাশুল। সঠিক সময়ে রিভিউ নিলে প্রথম সেশনেই বাংলাদেশ থামাতে পারতো কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমাহ বনারের রেকর্ড গড়া জুটি। দুই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানের রেকর্ড গড়া ২১৬ রানের জুটিতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। টেস্ট ইতিহাসের দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ।চতুর্থ ইনিংসে দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের সেরা জুটি এটিই। তাইজুল ইসলামের শিকার হয়ে বনার ৮৬ রান করে ফেরার সময়ও জয়ের জন্য ক্যারিবীয়দের প্রয়োজন ছিল ১২০ রান। অভিজ্ঞ জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে (৯ রান) দ্রুত ফিরিয়ে আশা জাগান নাঈম হাসান। তবে কাইল মেয়ার্স এদিন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। সপ্তম উইকেটে জশুয়া সিলভাকে (২০ রান) নিয়ে শতরানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। তার আগে তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি। অভিষেক টেস্টের শেষ ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো প্রথম ক্রিকেটার কাইল মেয়ার্স। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও মেহেদী হাসান মিরাজের শিকার ৪ উইকেট।

জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের উইকেটের আচরণও ছিল রহস্যজনক। স্পিন ট্র্যাক বানিয়ে সফরকারীদের কাবু করার পরিকল্পনায় চার স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে উইকেট থেকে বাড়তি সহায়তা পাবার আশায় ছিল বাংলাদেশ দল। প্রত্যাশিত সুবিধা অবশ্য পাওয়া যায়নি। ভুগিয়েছে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিও। প্রথম ইনিংসে বোলিংয়ের সময় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর আর ফিরতে পারেননি সাকিব।

সাগরিকার উইকেটের এমন আচরণ নতুন নয়। এর আগে ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ৩১৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। আশা জাগিয়েও নিউজিল্যান্ডের শেষের ৩ উইকেট তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৩০
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৫৯
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২২৩/৮ (ডি.)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৯৫, আগের দিন ১১০/৩) ১২৭.৩ ওভারে ৩৯৫/৭ (মেয়ার্স ২১০*, বনার ৮৬; মিরাজ ৪/১১৩, তাইজুল ২/৯১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০তে এগিয়ে
ম্যাচসেরা: কাইল মায়ার্স।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here