কারাগারে লেখক মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

0
106

বাংলা খবর ডেস্ক:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই-সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তারা এ ঘটনায় রাষ্ট্রকে দায়ী করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বাতিল চেয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্কসবাদী) সভাপতি আল কাদেরী জয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শোভন রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজিব কান্তি রায় প্রমুখ।

নাসিরউদ্দিন প্রিন্স বলেন, করোনার ১১ মাসে দেশে যে মহা লুটপাট ও দুর্নীতি হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন লেখক মুশতাক। এই সরকার এতই অসহিষ্ণু, তার মসনদ এতই দুর্বল যে, এই ন্যূনতম সমালোচনাও সহ্য করতে পারেনি। যেই এ সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করবে তাকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ঠেলে দেওয়া হয়। যে সমাজে কথা বলার মতো কেউ থাকে না, সে সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। রাষ্ট্রীয়ভাবে মেরুদণ্ড ভাঙার আয়োজন চলছে। ছয় বার জামিন আবেদন করেও তিনি জামিন পাননি।

লেখক মুশতাক অন্যের বিশ্বাসে আঘাত করে লিখতেন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

লেখক মুশতাক আহমেদ আগেও দুয়েকবার তার লেখনিতে আইনশৃঙ্খলা কিংবা অন্যের বিশ্বাসের প্রতি আঘাত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, অন্যের বিশ্বাসের প্রতি আঘাত করে লিখতেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটা মামলা ছিল।

আজ শুক্রবার দুপুরে ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় নবনির্মিত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেজন্য তার বিরুদ্ধে অনেকেই মামলা করেছিলেন। সম্প্রতি ২০২০ সালে যে মামলাটি হয়েছিল, সেই মামলার জন্য তিনি কাশিমপুর জেলখানায় অন্তরীণ ছিলেন।

কারাগারে থাকা লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু কিভাবে হলো? এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে কি না? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান বলে জেনেছি। তার মৃত্যুতে কারা কর্তৃপক্ষের কোনও গাফিলতি আছে কি-না তদন্ত করা হবে।

তিনি বলেন, দেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির পাঁয়তারা চলছে। আল জাজিরার প্রতিবেদন বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। যারা এই প্রতিবেদন তৈরিতে জড়িত সেসব বাংলাদেশির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশে থেকে কারা এই মিথ্যা প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছে সেটা নিয়ে তদন্ত করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ আজ অনেক সক্ষম। তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশে একটা শান্তির ফয়সালা করে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটা উপযুক্ত কার্যালয় স্থাপন করা হলো।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রামের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান ও আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী, চট্টগ্রামের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক ও সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here