বাদী সাবেক এসপি বাবুলই হলেন মিতু হত্যার মূল আসামি

0
230

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে মাহমুদা খানম মিতু হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। এ ঘটনায় মিতুর স্বামী চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

মামলায় আসামি করা হয়েছে আরও ৭ জনকে। মামলার বাদী হয়েছেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

বুধবার দুপুর পৌনে একটায় চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি।

পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় বাদী ছিলেন স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। পাঁচ বছর পর বাদীই হলেন হত্যার মূল আসামি।

তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার ডেকে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ তার বিরুদ্ধে মামলা করলেন মিতুর বাবা।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

পাঁচ বছর আগের এই হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের ‘সম্পৃক্ততার প্রমাণ’ পাওয়ার কথা বুধবার জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

এ তদন্ত সংস্থার প্রধান পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার বুধবার ঢাকার ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিত্যু হত্যার সঙ্গে স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

স্ত্রীকে খুন করাতে তিন লাখ টাকা দেন এসপি বাবুল:

ওদিকে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুন করাতে আসামিদেরকে তিন লাখ টাকা দিয়েছিলেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার। আদালতে দেওয়া দুই সাক্ষীর জবানবন্দি ও পিবিআইয়ের তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া পিবিআইয়ের দেওয়া প্রথম মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন ও নতুন করা মামলায় লেনদেনের উল্লেখ আছে।

এ বিষয়ে বাবুল আকতারের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, স্ত্রী হত্যার তিন দিন পর বাবুল আক্তার তার ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল হককে বলেন তার লাভের অংশ থেকে তাকে যেন টাকা তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়। সাইফুল বিকাশের মাধ্যমে ওই টাকা গাজী আল মামুনকে পাঠান। গাজী আল মামুন ওই টাকা মুসা, ওয়াসিমসহ আসামিদের ভাগ করে দেন। তবে কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, মিতু হত্যা মামলার ভিডিও ফুটেজে বাবুল আক্তারের সোর্স এহতেশামুল হক ভোলা, কামরুল শিকদার ওরফে মূসা ছিলেন। কিন্তু ঘটনার পরপর তিনি দাবি করেছিলেন, হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিরা জড়িত। তার সোর্সকে তিনি চিনলেও বিষয়টি চেপে যান বাবুল। ভুলেও তিনি সাইফুল হকের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া মুসা ও ওয়াসিমসহ আসামিদের তিন লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেননি।

এ দিকে গত মঙ্গলবার বাবুলের ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল ও মামুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দীনের আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। সেখানে দুজনই বাবুলের নির্দেশে স্ত্রী হত্যায় জড়িতদের টাকা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here