জাফরুল্লাহ-ফখরুল সাহেবরা বিভ্রান্তি ছড়াতেই বক্তব্য দেন : তথ্যমন্ত্রী

0
42

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রোডম্যাপ ঠিক করেই সরকার ব্যাপক হারে টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি পূর্বের ধারাবাহিকতায় এ নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে।

আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া মাসে এক কোটি টিকা দেওয়ার ঘোষণা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা’ মন্তব্যে নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘সরকার রোডম্যাপ ঠিক করেই এ ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি নেতারা টিকা নিয়ে বরাবরই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার যে টিকা গবেষণায় অত্যন্ত সফল টিকা হিসেবে উঠে এসেছে, সেই টিকা নিয়েও তারা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল যে এই টিকা দিলে বরং মানুষের স্বাস্থ্যহানি হবে। পরবর্তীতে তারা নিজেরাই আবার সেই টিকা নিয়েছেন। সুতরাং তারা আগে থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর ধারাবাহিকতায়ই এই কথাগুলো বলছেন। একজন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বা একটি বড় রাজনৈতিক দলের মহাসচিব হিসেবে বিভ্রান্তি ছড়ানো কখনো সমীচীন নয়।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহর মন্তব্য ‘সরকারের ভুল নীতির কারণে দেশে মৃত্যুহার বেড়েছে’ এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব ও উপমহাদেশের পরিস্থিতি তার অজানা থাকার কথা নয়। আপনারা জানেন যে, করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্ট পৃথিবীর এক শর বেশি দেশে ছড়িয়েছে। যে সমস্ত দেশে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানেও এই ভেরিয়েন্ট ছড়িয়েছে। অনেক দেশে, অনেক অঞ্চলে যেখানে সবকিছু মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল সেখানে আবার নতুনভাবে স্বাস্থ্যবিধি আরোপ করা হয়েছে। এগুলো জাফরুল্লাহ সাহেব জেনেও মাঝে-মধ্যে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কিছু কথাবার্তা বলেন। তার এই বক্তব্য বিভ্রান্তিমূলক ছাড়া অন্য কোনো কিছু না।

শুরু থেকেই করোনা মহামারি মোকাবেলায় সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে এবং সে কারণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে করোনার প্রথম ঢেউ আমরা অত্যন্ত সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি এবং দ্বিতীয় ঢেউও আমরা এখন পর্যন্ত অনেকটা মোকাবেলা করতে পেরেছি, উল্লেখ করেন ড. হাছান।

তিনি বলেন, এর মধ্যেই গণটিকাদান শুরু হয়েছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, এ বছরের মধ্যে ১০ কোটি ডোজ টিকা আসবে এবং সম্ভব হলে প্রতিমাসে এককোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। এগুলো জাফরুল্লাহ সাহেবরা জেনেও না জানার ভান করেন আর জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা বক্তব্য রাখেন।

‘লকডাউনের মধ্যেই রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খুলে দেওয়া, শ্রমিকদের দুর্ভোগ, ব্যাপক করোনা সংক্রমণের আশংকা এবং এ নিয়ে কেন সচিব পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’ সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেই সরকারের কাছে দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে সচিব বৈঠক করলেও সিদ্ধান্তটি কোনো ব্যক্তি বা সচিবের নয়। এটি সরকারেরই সিদ্ধান্ত। তবে গার্মেন্ট কারাখানার মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ঢাকায় অবস্থানরত বা ঢাকার আশপাশে যে সমস্ত শ্রমিক আছে তাদের দিয়ে তারা আপাতত শুরু করবেন। কোনো কোনো গার্মেন্টস মালিক সেটির ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে ঢাকার বাইরের শ্রমিকদেরও কাজে যোগদান করার জন্য ফোন করা হয়েছে। এখানেই বিভ্রান্তিটা হয়েছে।

মহামারিতে জীবন এবং জীবিকা দুটির মধ্যেই সমন্বয় ঘটাতে হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মনে রাখতে হবে, আমাদের অর্থনীতি অনেকটা গার্মেন্টের ওপর নির্ভরশীল। কারণ রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগ এখান থেকে আসে। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর সেক্টর। সময়মতো ডেলিভারি দিতে না পারা বা এক সপ্তাহ দেরি হলে অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। এটি ব্যাপক আকারে হলে দেশ অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই বিষয়টাও দেখতে হয় ব্যবসায়ী স্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থে।

আইপি টিভি অনুমোদন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো আইপি টিভিকেই এখনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার জন্য আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৬ শর কাছাকাছি আবেদন পড়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে খুব সহসা এ মাসের মধ্যেই আমরা কিছু আইপি টিভি অনুমোদন দেব। আপনারা জানেন, নীতিমালা অনুযায়ী কোনো আইপি টিভি সংবাদ পরিবেশন করতে পারে না। নানা আইপি টিভির বিরুদ্ধে অনেক সময় অভিযোগ আসে। সেই প্রেক্ষিতে সময়ে সময়ে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here