আজ থেকে ছয় দিনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকা

0
590

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সর্বশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী আজ শনিবার থেকে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে শুরু করতে যাওয়া গণটিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে ছয় দিনে প্রায় ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এই কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার পাবেন বয়স্ক ব্যক্তি, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরা।

সারা দেশে বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির পরিকল্পনা কয়েক দফা পরিবর্তনের পর তকাল শুক্রবার এই লক্ষ্যের কথা জানানো হলো।

বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির সার্বিক বিষয় জানাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন থাকবেন বলে বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমকে জানানো হয়। রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) ভবন প্রাঙ্গণে সেভাবেই আয়োজন করা হয়। তাঁদের বসার জন্য আলাদা চেয়ারও রাখা হয়, কিন্তু গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বা সচিব কেউ ছিলেন না। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের কাছে পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আগের দিনের আরেক দফা পরিবর্তিত কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

মহাপরিচালক জানান, ৭ থেকে ১২ আগস্ট ছয় দিন চলবে বিশেষ কর্মসূচি। এই ছয় দিনে সারা দেশে প্রায় ৩২ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে।

টিকায় অগ্রাধিকার : অধ্যাপক খুরশীদ আলম জানান, আজ ৭ আগস্ট ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠী; অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। তিনি জানান, সারা দেশে চার হাজার ৬০০টি ইউনিয়নে, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভায় এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ডে ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকারী ও ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে একযোগে টিকা দেওয়া হবে। আজ দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকা দেওয়া হবে। ৮ ও ৯ আগস্ট ইউনিয়ন ও পৌরসভার বাদ পড়া ওয়ার্ডে এবং ৭ থেকে ৯ আগস্ট সিটি করপোরেশন এলাকায়, ৮ ও ৯ আগস্ট দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং ১০ থেকে ১২ আগস্ট বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের জনগোষ্ঠীর ৫৫ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এর আগে ৭ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহে প্রায় এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানালেও শেষ মুহূর্তে তা কিছুটা কমিয়ে আনা হলো।

এর আগে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী সবাইকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলা হলেও ছয় দিনের কর্মসূচিতে তা হচ্ছে না বলে জানালেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘১৮ বছরের বেশি বয়সী অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। পরিচয়পত্র ছাড়া এখনই টিকার আওতায় আনা হলে মাঠে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে সেটাকে আমরা সামাল দিতে পারব না। সে জন্য আমরা ঠিক করেছি আপাতত বয়সসীমা ২৫ বছর থাকবে।’

তবে ওই বয়সসীমার ওপরে যাঁরা আগেই সুরক্ষা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তাঁদের নিবন্ধনে উল্লেখ করা কেন্দ্রে গিয়েই এসএমএস পাওয়ার ভিত্তিতে টিকা নিতে হবে।

আর ইউনিয়ন, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এলাকায় ছয় দিনের বিশেষ ‘ক্যাম্পেইনের’ টিকাদান আলাদাভাবে পরিচালিত হবে। পঁচিশোর্ধ্ব যাঁরা নিবন্ধন করতে পারেননি, তাঁরাও এ সময় জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে জানান দেওয়া হয় যে ৭ আগস্ট থেকে দেশে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সবার মধ্যে টিকা দেওয়া শুরু হবে। সাত দিনে প্রায় এক কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। হঠাৎ বুধবার রাতে গণমাধ্যম জানতে পারে, গণটিকাদানের এই বিশেষ কর্মসূচি কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। সাত দিনের পরিবর্তনে ৭ আগস্ট শুধু এক দিনে সারা দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ২০০ জন করে মোট ৬০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। পরে এই কর্মসূচি আবার শুরু হবে ১৪ আগস্ট থেকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, কর্মসূচি হবে ৭ থেকে ৯ আগস্ট। তবে নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি যেভাবে চলছে সেভাবেই চলতে থাকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here