শিথিল লকডাউন: খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র

0
67

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে চলমান বিধিনিষেধ আরও শিথিল করেছে সরকার। ১৯ আগস্ট থেকে খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র।

তবে আসন সংখ্যার ৫০ ভাগ ব্যবহারের শর্তে এসব খুলে দেওয়া হচ্ছে। একই দিন থেকে অর্ধেক নয়, সব সংখ্যক বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহণ চলাচল করতে পারবে।

বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হলে আবারও বিধিনিষেধ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করে বলেন, ‘আমরা দুটি কৌশল অবলম্বন করব।

একটা হলো বিধিনিষেধ বা লকডাউন দেওয়া। আরেকটি হচ্ছে বিধিনিষেধ ছেড়ে দেওয়া। কিন্তু সবাইকে মাস্ক পরতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর যে কোনো দেশে সংক্রমণ বাড়লে যা করে যেমন-অস্ট্রেলিয়ায় সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে এবং কারফিউ দেওয়া হয়েছে। আমেরিকায়ও নানা বিধিনিষেধ ছিল।’

নতুন করে বিধিনিষেধ দেওয়ার প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত বছর থেকে সরকার বিভিন্ন সময়ে বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছে। আবার সময়ে সময়ে তা শিথিলও করছে। সর্বশেষ ১১ আগস্ট থেকে বিধিনিষেধ আরও শিথিল করে অর্ধেক গণপরিবহণ চালু এবং সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শপিংমল খুলে দেওয়া হয়। এর পরদিনই বৃহস্পতিবার আরেকটি অফিস আদেশ জারি করে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র খুলে দেওয়া এবং পুরো গণপরিবহণ চালুর অনুমতি দিল সরকার। এ আদেশে বলা হয়েছে, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সড়ক, রেল ও নৌপথে সব ধরনের গণপরিবহণ চলাচল করতে পারবে। পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র আসন সংখ্যার শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান প্রতিপালনে অবহেলা বা ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিভিন্ন পেশার মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিধিনিষেধ শিথিল করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, যদিও পরিস্থিতি কিন্তু এখনো সন্তোষজনক নয়। সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ শিথিল করার ধারাবাহিকতায় আরেকটি প্রজ্ঞাপন হয়েছে। এ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আসন সংখ্যার অর্ধেক ব্যবহার করে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র চালু করতে বলা হয়েছে। প্রথমে ১১ আগস্ট থেকে অর্ধেক সংখ্যক গাড়ি নিয়ে চালু হয়, ১৯ আগস্ট থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরোপুরি চালু হবে। তিনি বলেন, ‘নিউ নরমাল লাইফে আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে পারব। আমাদের এখন স্বাস্থ্যবিধির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। মাস্ক পরে, শারীরিক দূরত্ব মেনে সবাই তাদের কাজগুলো করবে, সেটিই আমরা প্রত্যাশা করি। আমাদের সংক্রামক ব্যাধি আইন আছে, কেউ আইন ভাঙলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার যথেষ্ট কাজ করেছে বলে সংক্রমণ একটা জায়গায় আটকে গেছে। না হলে করোনা সংক্রমণ বিস্ফোরণ ঘটতে পারত। আমরা চাই সবাই সহযোগিতার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক অবস্থা চালু রেখে যাতে সবকিছু করতে পারি।’

বিধিনিষেধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না-এমন অভিযোগে তিনি বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। আমরা যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছি, কতটুকু করতে পারবে, কতটুকু করতে পারবে না, সেগুলো বুঝেই আমরা করেছি। আলোচনা না করার কারণে সমস্যা হয়েছে তা নয়।’

আমলাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্নে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যোগাযোগ সবার সঙ্গে আছে। আমরা এই পরিস্থিতিগুলো বুঝি। সবাই বার্গেইনিং করতে চায়, এটা হচ্ছে মেইন বিষয়। সব সময় আমরা আলোচনা করি। মাঠের বিভিন্ন তথ্য আমাদের হাতে থাকে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here