বিশেষ সুবিধা আরও এক বছর চায় বিজিএমইএ !

0
66

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নীতিমালার আওতায় খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন পরিশোধ (ওয়ান টাইম এক্সিট) সুবিধা আরও এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন সমিতির সভাপতি ফারুক হাসান।

চিঠিতে বলা হয়, গত দুই বছর বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় বারবার লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে দেশীয় শিল্প বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের ওপর নেতিবাচক এবং মারাত্মক ক্ষতির প্রভাব পড়েছে।

অনেক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সংকট দেখা দেওয়ার ফলে দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তারা হতাশ হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে যেসব গ্রাহক বা প্রতিষ্ঠান বিশেষ সুবিধার আবেদন করে ব্যাংকের বোর্ডের অনুমোদন পেয়েছিল কিন্তু করোনার কারণে এক বছরে ঋণের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি তাদের বিশেষ বিবেচনায় আরও এক বছর সময় বাড়ানো উচিত।

এক বছর সময় বাড়ানো হলে দেশের শিল্প খাত এবং ব্যাংক উভয়ই উপকৃত হবে। অর্থনীতির গতি বৃদ্ধি পাবে এবং খেলাপি ঋণ কমে আসবে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা মহামারীর মধ্যে বিজিএমইএ’র বেশির ভাগ সদস্য আশাতীত রপ্তানি করেছেন এবং লাভের মুখ দেখেছেন। শুধু তাই নয়েএ সময়ে পোশাক রপ্তানি খাতে বেশ কয়েকটি দেশকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। সদস্যদের কারো কারো বিরুদ্ধে ঋণের টাকা অন্য খাতে বিনিয়োগের অভিযোগও রয়েছে।

জানা যায়, খেলাপি ঋণ কমাতে সরকারের ইচ্ছায় ২০১৯ সালের ১৬ মে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ।

নীতিমালা অনুযায়ী, মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সরল সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ টানা ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। এ সুবিধার আওতায় স্বাধীনতার পর থেকে যারা ঋণখেলাপি তাদের এককালীন এক্সিট সুবিধা দেওয়া হয়।

এক্ষেত্রে তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব হয় ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের এককালীন হিসাবায়ন ভিত্তিতে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যত খেলাপি ঋণ ছিল তার হিসাব করা হয়।

কোনো ঋণখেলাপি যদি মনে করে এককালীন ঋণ পরিশোধ করে খেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবেন তাহলে সে ব্যবস্থাও রাখা হয় ওই বিশেষ সুবিধায়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, দুই শতাংশ ডাউনপেমেন্টে খেলাপিরা ঋণ পরিশোধের জন্য এক বছর পর্যন্ত সময় পাবেন। আগের সব সুদবাবদ পাওনা মওকুফ করা হবে। এককালীন পরিশোধের জন্য সুদহার আরও কম-ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ডের সমান। তবে এক বছরের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে সুবিধা বাতিল হবে। এককালীন এক্সিট সুবিধা ও পুনঃতফসিল সুবিধা কার্যকরের ৯০ দিনে ব্যাংক ও গ্রাহকের মামলা স্থগিত করতে হবে। পরবর্তীতে গ্রাহক কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সুবিধা বাতিল করে মামলা পুনরায় চালু হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এককালীন পরিশোধ বা এক্সিট সুবিধা নিয়েছেন চার হাজার ২২৫ জন গ্রাহক। এসব গ্রাহককে এক হাজার ৩২২ কোটি টাকার এক্সিট সুবিধা দিয়েছে ব্যাংকগুলো। অথচ সুদ মওকুফ করা হয়েছে এক হাজার ৬১৭ কোটি টাকা।

এর মানে এক্সিটের চেয়ে ২৯৫ কোটি টাকার বেশি সুদ মওকুফ করা হয়েছে। বিশেষ ওই নীতিমালার আওতায় ১৯ হাজার ১১৯ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়মিত হয়। এজন্য ব্যাংকগুলো সুদ মওকুফ করেছে ৮ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা।

সবমিলিয়ে নগদ আদায় হয়েছে ৩৩৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকার পুনঃতফসিলের জন্য সুদ মওকুফ করা হয়েছে ৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা।

যেখানে ডাউনপেমেন্ট হিসাবে নগদ আদায় হয়েছে ৪২০ কোটি টাকা। অন্যদিকে এক হাজার ৩২২ কোটি টাকার এক্সিট সুবিধার জন্য সুদ মওকুফ করা হয়েছে এক হাজার ৬১৭ কোটি টাকা।

এর বিপরীতে নগদে আদায় হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় সরকারি ব্যাংক বেশি হারে সুদ মওকুফ করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here