বিশ্বকাপ-উত্তর পথচলা শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ আজ

0
368
পুরানো ছবি

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
টি ২০ বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে এক সপ্তাহও হয়নি। এরই মধ্যে রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড ভারত সফরে তাদের প্রথম ম্যাচ খেলে ফেলেছে এই ফরম্যাটে। সুপার টুয়েলভ থেকে ছিটকে পড়া বাংলাদেশও বিশ্বকাপ-উত্তর পথচলা শুরু করতে যাচ্ছে আজ।

দ্বিপাক্ষিক সিরিজে তারা আতিথ্য দিয়েছে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া পাকিস্তানকে। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি ২০-তে আজ বাবর আজমের পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে মাহমুদউল্লাহর বাংলাদেশ।

আগামীকাল দ্বিতীয় ও সোমবার সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ একই ভেন্যু মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একই সময়ে শুরু হবে বেলা ২টায়।

এদিকে ১৯ মাস পর এই সিরিজ দিয়ে দর্শকরা ফিরবেন ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বৃহস্পতিবার টিকিট বিক্রির প্রথমদিন দর্শকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। টিকিট না পেয়ে বেশির ভাগ দর্শককে ফিরে যেতে হয়েছে। অনেক দর্শকের অভিযোগ, ১০০ টাকা দামের সিংহভাগ টিকিট কালোবাজারিদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

বিসিবি জানিয়েছে, ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ টিকিট ছাড়া হবে। টিকিট কেনা ও মাঠে প্রবেশের সময় দর্শকদের কোভিড টিকা নেওয়ার সনদপত্র অবশ্যই দেখাতে হবে। তবে ১৮ বছরের কম বয়সিদের তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র দেখালেই হবে।

বিশ্বকাপের আগে নিজেদের মাঠে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খুদে ফরম্যাটের সিরিজ জেতার আত্মবিশ্বাস নিয়ে বৈশ্বিক আসরে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ যারপরনাই হতাশ করেছে। সুপার টুয়েলভে পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে হেরে দেশে ফেরার পর দলে বড় ধরনের ঝাঁকুনি দেওয়া হয়েছে। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির দরুন আগেই ছিটকে পড়েন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল।

একই কারণে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও দলের বাইরে। বাদ পড়েছেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। তবে আলোচনার খোরাক জুগিয়েছে মুশফিকুর রহিমের বাদ পড়া। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ‘বাদ পড়া’ না বলে জানিয়েছেন, মুশফিককে ‘বিশ্রাম’ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক চলছে। খোদ মুশফিক জানিয়েছেন, তিনি বিশ্রাম চাননি।

বাংলাদেশ দলে ছয় নবাগতের অন্তর্ভুক্তি দলটিকে নতুন চেহারা দিয়েছে। পাকিস্তান বেশ ভালো করেই জানে যে, নিজেদের মাঠে স্পিননির্ভর পিচে বাংলাদেশ দাপট দেখাতে পারদর্শী। স্পিনই যে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের প্রধান রসদ, সে কথা মাথায় রেখে কাল অনুশীলনে অতিথি দলের ব্যাটাররা নেটে স্লো বোলারদের বেশি খেলেছেন। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের লক্ষ্য, এই সিরিজেও বিশ্বকাপের মোমেন্টাম ধরে রাখা।

অনভিজ্ঞ দলের নেতৃত্ব মাহমুদউল্লাহর কাঁধেই থাকছে। নাজমুল হোসেন শান্ত, সাইফ হাসান, ইয়াসির আলীদের পথ দেখানোর দায়িত্ব অধিনায়কের। ১৬ জনের দলে তিনিই যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ। দলে অভিজ্ঞতার ঘাটতি পোষাতে হয়তো মিডল-অর্ডারের বাতিঘর হতে হবে মাহমুদউল্লাহকে।

আর মোহাম্মদ নাঈম, আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসানদের ইনিংস নির্মাণে এক একটি ইটের ভূমিকা রাখতে হবে। ব্যাটিংয়ের তুলনায় বোলিংয়ে বাংলাদেশের শক্তি অনেকটা অপরিবর্তিত।

বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে ৬.৫০ ইকোনমিতে ছয় উইকেট পাওয়া পেসার তাসকিন আহমেদের সঙ্গে রয়ে গেছেন আরব আমিরাতে হতাশ করা মোস্তাফিজুর রহমান। সাকিবের অনুপস্থিতিতে স্পিন আক্রমণের গুরুদায়িত্ব সামলাতে হবে মেহেদী হাসান ও নাসুম আহমেদকে।

সেই সঙ্গে ফিল্ডিংও হওয়া চাই চৌকশ। টি ২০ বিশ্বকাপে ১১টি ক্যাচ ফেলেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। তার জেরে কোপটা পড়েছে ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের ওপর। এই সিরিজের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন ফিল্ডিং কোচ করা হয়েছে মিজানুর রহমানকে। সিরিজে ভালো করতে হলে এই বিভাগে চোখে পড়া উন্নতির কোনো বিকল্প নেই।

পাকিস্তানি লেগ-স্পিনার শাদাব খান হুমকি হতে পারেন মাহমুদউল্লাহদের জন্য। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে পাঁচ উইকেটের চারটিই নিয়েছিলেন শাদাব। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উইকেট নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। পুরোপুরি মন্থর উইকেট বানিয়ে তাসমানতীরের দুই পড়শিকে ধরাশায়ী করেছিল বাংলাদেশ। আশা করা হচ্ছে, চলতি সিরিজ হবে স্পোর্টিং উইকেটে।

বাংলাদেশের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে এই ফরম্যাটে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ দুটি টি ২০-তে জয়। ২০১৫ সালে শেষবার পাকিস্তান দলের বাংলাদেশ সফরে একমাত্র টি ২০-তে জিতেছিল স্বাগতিকরা। এরপর ২০১৬ এশিয়া কাপেও একই ফরম্যাটে বাংলাদেশ হারিয়েছিল পাকিস্তানকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here