ওমিক্রন অবিশ্বাস্য গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

0
65

বাংলা খবর ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবিশ্বাস্য গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।

বিশ্বের ৭৭ দেশে এ পর্যন্ত নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের রোগী শনাক্ত হয়েছে। খবর বিবিসির।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, হয়তো আরও অনেক দেশেই ছড়িয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট, যা এখনও শনাক্ত হয়নি।

তিনি বলেন, এই ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তিনি উদ্বিগ্ন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, আমরা এখন নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারছি যে, এই ভাইরাসকে শুরুতে একেবারেই গুরুত্ব দিইনি আমরা। এখন ওমিক্রন যদি অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর রোগও হয়ে থাকে, আক্রান্তের হারে যে ঊর্ধ্বগতি তার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রস্তুত নয়; ফলে আবারও পুরো বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি বেকায়দায় পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে অতি সংক্রমণশীল এবং সারা বিশ্বে এই ভ্যারিয়েন্ট প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে, কিন্তু এর লক্ষণগুলো খুবই মৃদু।

নভেম্বরে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় এবং দেশটিতে এখন পর্যন্ত নতুন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সেরিল রামাফোসা নতুন এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে আছেন এবং এখন তার শরীরে মৃদু উপসর্গ রয়েছে।

ওমিক্রনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ফলে চাপে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি।

কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ওমিক্রনের ছড়িয়ে পড়া আটকানো যায়নি। মঙ্গলবারের ওই সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশে দেশে বৈষম্যের বিষয়টি আবারও তুলে ধরেন।

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে অনেক দেশই এখন বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করছে। ফাইজার/বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন নিয়ে করা এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মূল স্ট্রেনের তুলনায় ওমিক্রনের বিরুদ্ধে অনেক কম অ্যান্টিবডি তৈরি করে।

কিন্তু এই ঘাটতি তৃতীয় একটি ডোজ বা বুস্টার ডোজের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব।

লন্ডনে করোনা আক্রান্তদের ৪৪ শতাংশ ওমিক্রনে সংক্রমিত:

ওদিকে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ বলেছেন, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট যুক্তরাজ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। লন্ডনে আক্রান্তের ৪৪ শতাংশ ওমিক্রনে সংক্রমিত, আর যুক্তরাজ্যে ২০ শতাংশ।

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে প্রথম মৃত্যু হলো ব্রিটেনে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সোমবার গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।

জনসন বলেছেন, এই দেশে ওমিক্রনে আক্রান্ত অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, দ্রুত মিউটেশনের ফলে ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়তে পারে ওমিক্রনের তরঙ্গ। এর জন্য সচেতন থাকা জরুরি। খবর বিবিসির।

তবে ওমিক্রনে মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে এর বেশি তথ্য দেননি বরিস। তার বিদেশে যাওয়ার কোনো ইতিহাস ছিল কিনা, তাও জানা যায়নি।

ব্রিটেনে গত ২৭ নভেম্বর প্রথম ওমিক্রন আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। রোববার প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বুস্টার টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেন।

ওমিক্রন ধরন প্রথম আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায় শনাক্ত হয়। এর পর করোনার এ ধরন আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরাইল, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, নাইজেরিয়া।

নতুন ধরন ছড়ানো শুরুর পর থেকে আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে বিভিন্ন দেশ।

এই ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে কমপক্ষে ৭০ দেশ ও অঞ্চল আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

ওমিক্রন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, যারা আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তারাও ওমিক্রনে আক্রান্ত হতে পারেন। যদিও কতটা সংক্রামক তা এখনও স্পষ্ট নয়। আরটি-পিসিআর পরীক্ষা এই রূপকে দ্রুত ধরতে সক্ষম বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here