৬ কোটি টাকা জরিমানা এড়াতে ২০৪ কোটি জলে

0
58

বাংলা খবর ডেস্ক:
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে গত ২ মার্চ রকেট হামলার শিকার হয় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। এ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। এ ছাড়া আগুনে ইঞ্জিন রুমসহ অনেক অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জাহাজটিকে আপাতত পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ইউক্রেনে যখন যুদ্ধ পরিস্থিতি- তখন বিষয়টি জানা সত্ত্বেও কেন জাহাজটি ইউক্রেনের বন্দরে নোঙ্গর করল। কারণ জয়েন্ট ওয়ার কমিটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর এলাকাকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধকবলিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছিল। অথচ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ সে এলাকায় নোঙর করে ২২ ফেব্রুয়ারি।

জানা গেছে, জাহাজটি ভাড়া নেওয়া পক্ষের ৬ কোটি টাকা জরিমানা এড়াতে বাংলার সমৃদ্ধিকে যুদ্ধাঞ্চল ইউক্রেনের বন্দরে পাঠানো হয়। কিন্তু রকেট হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় এখন ২০৪ কোটি টাকার গোটা জাহাজটাই হারাল বিএসসি।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে জাহাজটি ইউক্রেনে নেওয়া হয়। যদিও যুদ্ধকবলিত অঞ্চলে জাহাজ কিংবা নাবিকের যাওয়ায় আইনে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

এ ব্যাপারে বিএসসির নির্বাহী পরিচালক পীযূষ দত্ত বলেন, চার্টাররা (ভাড়া নেওয়া পক্ষ) যদি যেতে না চাইত তা হলে আমরা কখনই জাহাজটি পাঠাতাম না। যেহেতু চার্টাররা যেতে চেয়েছে, তাই আইনগতভাবে তাদের বাধা দেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। কিন্তু বিআইএমসিও ওয়ার রিস্ক ক্লজ ফর টাইম চার্টারিংয়ের ২০১৩ ‘বি’ ধারায় বলা আছে, যুদ্ধ এলাকায় জাহাজের মালিক বা মাস্টার যেতে বাধ্য নন। এ ছাড়া চার্টার পার্টি বিধিমালায় যুদ্ধকবলিত এলাকায় জাহাজ গমনে নিষেধাজ্ঞা আছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশে মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ওয়ার জোন ঘোষণার পরও বিএসসি যুদ্ধাঞ্চলে জাহাজ পাঠিয়েছে। আমরা মনে করি, এটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। এর বিরুদ্ধে আমরা উচ্চপর্যায়ে তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি। ‘বাংলার অর্জন’ নামে আরেকটি জাহাজ ইউক্রেনের জলসীমা থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ফিরিয়ে আনে বিএসসি। তা হলে কেন বাংলার সমৃদ্ধিকে তখন ফিরিয়ে আনা হয়নি- এটিই এখন বড় প্রশ্ন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here