বাংলা খবর ডেস্ক:
প্রতি ঈদেই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে বিগ বাজেটের একাধিক সিনেমা মুক্তি পায়। এবারের ঈদুল ফিতরেও এর ব্যত্যয় ঘটছে না। রোজায় সিনেমা হল বন্ধ রয়েছে। ফলে হল মালিকরাও অপেক্ষায় আছেন ঈদের সিনেমার জন্য। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের ঈদে রেকর্ডসংখ্যক সিনেমা মুক্তি পাবে। চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত চারটি সিনেমার প্রযোজক ঈদে সিনেমা মুক্তি দিতে আবেদন করেছেন। এই চারটি সিনেমা হলো বিদ্রোহী, শান, গলুই ও বড্ড ভালোবাসি। চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির অফিস সেক্রেটারি সৌমেন রায় বাবু বলেন, ‘এবারের ঈদে ঠিক কতগুলো সিনেমা মুক্তি পাবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। পুরো মাস যেহেতু এখনো বাকি ফলে সঠিক হিসাবটা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ অনেক সিনেমা ঈদের ঠিক কয়েক দিন আগে মুক্তি কথা ঘোষণা করে। আবার অনেক সিনেমা ঘোষণা দিয়েও পিছিয়ে যায়। তবে এখন পর্যন্ত চারটি সিনেমা ঈদে মুক্তি দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে।’
ঈদে মুক্তি দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়েছে শাকিব খান-পূজা চেরী অভিনীত চলচ্চিত্র গলুই। ছবিটির প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘আমরা ঈদুল ফিতরেই ছবিটি মুক্তি দিতে চাই। ইতিমধ্যেই বুকিং শুরু হয়ে গেছে। প্রচার প্রচারণাও শুরু করে দিয়েছি।’ ছবিটি মুক্তির মিছিল থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে ‘গলুই’ ছবির পরিচালক এস এ হক অলিক বলেন, ‘পিছিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। কারণ ইতিমধ্যেই আনুমানিক ১৫/২০টি হল বুকিং হয়ে গেছে। প্রতি দিনই হলের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা ইতিমধ্যে প্রচারণাও শুরু করেছি। ঈদুল ফিতরে অবশ্যই আসছে গলুই।’ মুক্তির তালিকায় থাকা ‘বিদ্রোহী’ সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন শাকিব খান, তার বিপরীতে রয়েছেন শবনম বুবলী। ফলে এবারের ঈদে শাকিব খান অভিনীত দুটি সিনেমা মুক্তি পেতে যাচ্ছে। প্রতি ঈদেই এই নায়কের একাধিক সিনেমা মুক্তি পায়। ছবিটির পরিচালক শাহীন সুমন বলেন, ‘বিদ্রোহী’ ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাবে এটা চূড়ান্ত। হল বুকিংও শুরু করে দিয়েছি। তবে কতগুলো হল পাব সেটা বলতে পারছি না। কারণ, এখন তো সিনেমা হলের সংখ্যা খুবই কম। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাব সর্বোচ্চ সংখ্যক হল নেওয়ার।’ ‘বিদ্রোহী’ সিনেমার প্রযোজক সেলিম খান বলেন, ‘আমাদের টার্গেট এবারের ঈদেই ছবিটি মুক্তি দেব। এখন পর্যন্ত পিছিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই।’
সিয়াম আহমেদ ও পূজা চেরী অভিনীত ‘শান’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল কয়েক মাস আগেই। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ছবিটি সে সময় মুক্তি পায়নি। এবারের ঈদে ছবিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে হল বুকিংও শুরু হয়েছে। ছবির পরিচালক এম রাহিম বলেন, ‘ঈদুল ফিতরেই আমরা ছবিটি মুক্তি দেব। পেছানোর কোনো ইচ্ছে নেই। আমরা হল বুকিংও শুরু করে দিয়েছি। শুনেছি আরও অনেক সিনেমা মুক্তি পাবে। তা সত্ত্বেও আমাদের পেছানোর কোনো ইচ্ছে নেই।’ এদিকে প্রযোজক সমিতিতে তালিকাবদ্ধ ছবিগুলো ছাড়াও মুক্তির মিছিলে রয়েছে আরও ৬ সিনেমা ‘পাপ-পুণ্য’, ‘প্রেমপ্রীতির বন্ধন’, ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘ক্যাসিনো’, ‘রিভেঞ্জ’ ও ‘ওস্তাদ’। সব মিলিয়ে ১০টি সিনেমা মুক্তির মিছিলে রয়েছে। এতগুলো সিনেমা মুক্তির মিছিলে থাকলেও দেশে হলসংখ্যা খুবই কম। দেশে সিনেমা হল চালু আছে ১০০টির মতো। এত অল্প হলে এতগুলো সিনেমার মুক্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অনেকেই। প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে সব মিলিয়ে শখানেক সিনেমা হল চালু রয়েছে। ঈদের সময় কিছু হল সংস্কার করে নতুন করে চালু হবে। সব মিলিয়ে ঈদে প্রায় দেড়শ সিনেমা হল চলবে। এত অল্পসংখ্যক সিনেমা হলের জন্য এত বেশি সিনেমা মুক্তি দিলে সিনেমাগুলো ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই সিনেমার স্বার্থে ঈদের জন্য কেবল দুটি বা তিনটি সিনেমার বেশি রাখা উচিত নয়।
