নতুন বিব্রতকর রেকর্ডে নাম তুলেছে বাংলাদেশ

0
56
টাইগারদের আউট করে শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস

বাংলা খবর ডেস্ক:
মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হওয়ার পরও লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে ৩৬৫ রানের একটি বড় সংগ্রহ দাঁড় করেছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে আরও তিনটি শূন্য যোগ করে নতুন বিব্রতকর রেকর্ডে নাম তুলেছে বাংলাদেশ।

টেস্ট ক্রিকেটে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ শূন্যের বিশ্বরেকর্ডে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গী হলো তারা। এ তিন দলই এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৯টি ডাকের নজির রয়েছে।

১৯৯০ সালে ভারতের বিপক্ষে চন্ডিগড় টেস্টে দুই ইনিংস মিলে শ্রীলঙ্কার নয় ব্যাটাসম্যান আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। এর দশ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্রিসবেন টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নয় ব্যাটসম্যান আউট হন রানের খাতা খোলার আগে। এতোদিন ধরে এ দুই দলেরই ছিল ম্যাচে সর্বোচ্চ শূন্য রানের রেকর্ড।

দীর্ঘ ২২ বছর পর এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ নাম লেখালো এই বিব্রতকর রেকর্ডে। প্রথম ইনিংসে রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হয়েছিলেন তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন, এবাদত হোসেন ও খালেদ আহমেদ। দ্বিতীয় ইনিংসেও শূন্য রানে আউট হন তামিম ইকবাল, খালেদ আহমেদ ও মুমিনুল।

বাংলাদেশের নয় শূন্য ছাড়াও শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে রানের খাতা খুলতে পারেননি কাসুন রাজিথা ও প্রবীণ জয়াবিক্রম। অর্থাৎ সবমিলিয়ে পুরো ম্যাচে শূন্যের দেখা মিলেছে ১১টি। এটিও বিশ্বরেকর্ড। এ নিয়ে ১৩টি ম্যাচে ১১ জন ব্যাটসম্যানের ডাকের দেখা মিললো।

সবশেষ ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ও উইন্ডিজের মধ্যকার কিংসটন টেস্টে দেখা গিয়েছিল ১১টি ডাক। সেই ম্যাচেই নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের কোনো ম্যাচে ১১ বার ব্যাটসম্যানের শূন্য রানে আউট হলেন।

ওদিকে ঢাকা টেস্টের পঞ্চম দিনে আজ ১০ উইকেটে হেরে গেছে মুমিনুল হকের দল। টাইগারদের দেওয়া ২৯ রানের টার্গেটে মাত্র ৩ ওভারেই পৌঁছে গেছে শ্রীলঙ্কা। দুই ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দো (৯ বলে ২১*) আর অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে (৭*) দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।

ম্যাচসেরা হয়েছেন লঙ্কানদের জয়ের নায়ক আসিথা ফার্নান্দো। সিরিজসেরা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ।

প্রথম দিন থেকেই উত্থান -পতনের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে ঢাকা টেস্ট। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও বড় জুটি দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু আজ আর শেষ রক্ষা হলো না। লিটন-সাকিব চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এই দুজন ছাড়া আর কেউ রুখে দাঁড়াতে পারেনি। তাই পরাজয়ই নিয়তি। এই পরাজয়ে ১-০ ব্যবধানে সিরিজও হেরে গেল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টটি ড্র হয়েছিল।

এর আগে ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে করা ৫০৬ রানের জবাবে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে গতকাল বৃহস্পতিবার শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ২৩ রানের মধ্যেই নেই হয়ে যায় ৪ উইকেট! দলীয় ১৫ রানে ওপেনার তামিম ইকবালকে দিয়ে শুরু। প্রথম ইনিংসের মতো তিনি এবারও ডাক মারেন। এরপর একে একে আউট হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত (২), মাহমুদুল (১৫) এবং অধিনায়ক মুমিনুল হক (০)। ৪ উইকেটে ৩৪ রান নিয়ে গতকাল চতুর্থ দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ।

আজ শুক্রবার ১৬৯ রানে প্যাকেট হয়ে যায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। ম্যাচের পঞ্চম দিন সকালে বাংলাদেশ দল তাকিয়ে ছিল লিটন দাস আর মুশফিকুর রহিমের দিকে। দুজনে ভালোই শুরু করেছিলেন। কিন্তু দিনের অষ্টম ওভারেই কাসুন রাজিথার বলে বোল্ড হয়ে যান মুশফিকুর রহিম (২৩)। উইকেটে থাকা লিটন দাসের সঙ্গী হন সাকিব আল হাসান। দুজনের জুটিতেই ইনিংস হারের শঙ্কা কাটিয়ে লিড নেয় বাংলাদেশ। মধ্যাহ্ণ বিরতির আগে ৬১ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের ২৭ নম্বর ফিফটি তুলে নেন সাকিব। মধ্যাহ্ণ বিরতির পরই লিটন-সাকিব জুটিতে শতরান এসে যায়। কিন্তু তখনই ছন্দপতন।

নিজের বলে অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে লিটনকে ফিরিয়ে দেন আসিথা ফার্নান্দো। আউট হওয়ার আগে ১৩৫ বলে ৩ চারে ৫২ রান করে ফিরেন লিটন। ভাঙে ১০৩ রানের ৬ষ্ঠ উইকেট জুটি। সাকিবের সঙ্গে যোগ দেন মোসাদ্দেক। ১১ নম্বর বলে চার মেরে রানের খাতা খোলেন। কিন্তু সাকিব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। উইকেটকিপার নিরোশান ডিকাভেলার গ্লাভসে ধরা পড়ে শেষ হয় তার ৭২ বলে ৭ চারে ৫৮ রানের ইনিংস। শিকারী সেই আসিথা ফার্নান্দো। বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে ‘ডাক’ মারা মোসাদ্দেক রমেশ মেন্ডিসের বলে এলবিডাব্লিউ হন ৯ রানে। তাইজুল ইসলামকে (১) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন আসিথা ফার্নান্দো। আম্পায়ার আঙুল না তুললেও রিভিউ নিয়ে জিতে যায় শ্রীলঙ্কা। পরের বলেই ‘গোল্ডেন ডাক’ মারেন খালেদ আহমেদ। ১৬৯ রানে প্যাকেট হয়ে যায় বাংলাদেশ। লিড হয় মাত্র ২৮ রানের। আসিথা ১৭.৩ ওভার বল করে ৫ মেডেনসহ ৫১ রানে নেন ৬ উইকেট। ২টি নিয়েছেন কাসুন রাজিথা এবং রমেশ মেন্ডিস নিয়েছেন ১টি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here