আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের উৎসবমুখর বনভোজন

0
264

নিউইয়র্ক:
বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ২৪ জুলাই রোববার লং আইল্যান্ডের বেথপেজ স্টেট পার্কে আয়োজন করেছিল বার্ষিক বনভোজন। দিনভর হৈ-হুল্লর, খেলা-ধুলা আড্ডা ও সূরের বিনোদনের মধ্যদিয়ে কেটেছে দিনটি। বনভোজন কার্যত পরিণত হয় সাংবাদিক, তাদের পরিবার পরিজন ও শুভানূধ্যায়ীদের মিলনমেলায়।
কোভিড-১৯ এর প্রকট কেটে যাওয়ায় ব্যস্ততম জীবনের ফাঁকে একটু আনন্দ-বিনোদনের জন্য ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সংবাদ-কর্মীদের সংগঠন ‘আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’ নিয়েছিল বনভোজনের এই উদ্যোগ। আলো-ঝলমলে দিনে প্রচন্ড গরম থাকলেও পার্কের ছায়াঘেরা নির্মল পরিবেশ বনভোজনের আনন্দে তেমন বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারেনি। বনভোজনে নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিক, সমাজসেবক, ব্যবসায়ি, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল। এখানে সমাজ সচেতনতার কথা বিশেষ করে করোনা ও মাঙ্কিপক্স থেকে নিরাপদ থাকার বিভিন্ন পরামর্শও উঠে আসে বিভিন্নজনের বক্তব্যে।
দুপুরে বনভোজনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ সাঈদ,সাবেক সভাপতি দর্পন কবীর, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনজুরুল হকসহ কর্মকর্তাবৃন্দ।
সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত হন আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নাজমুল আহসান, সাবেক সভাপতি দর্পণ কবীর,আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান রচি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর, নিউইয়র্ক প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম, প্রথম আলো নর্থ আমেরিকার সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী, সাংবাদিক আমান উদ দ্দৌলা, রহমান মাহবুব, শেলী জামান খান, রোকেয়া দীপা, রওশন হক, লেখক ভায়লা সেলিনা।
প্রেসক্লাবের বনভোজনে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে উপস্থিত হয়েছিলেন কুইন্স ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এট লার্জ এটর্নী মঈন চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ শামসুদ্দিন আজাদ, ইমিগ্রান্ট এলডার হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ, চেয়ারম্যান নুসরাত আহমেদ, বারী হোম কেয়ারের সিইও আসেফ বারী টুটুল, চেয়ারম্যান মুনমুন হাসিনা বারী, টিডিএস ব্রোকারেজের কর্ণধার মামুনুর রশীদ, বিশিষ্ট সিপিএ মোহাম্মদ কে চিশতি, তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি পারভেজ সাজ্জাদ, কমিউনিটি এ্যাক্টিভিষ্ট ও বিশিষ্ট প্রমোটর জামান মনির, স্টার ফার্নিচারের কর্ণধার লায়ন রকি আলিয়ান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লায়ন জেএফএম রাসেল, লায়ন সাইফুল ইসলাম, লায়ন রুহুল আমিন, লায়ন আসাদুল হক প্রমূখ ।
কর্মকান্ডের মধ্যে ছিলো শুভেচ্ছা বিনিময়, আড্ডা, শিশু-কিশোর-কিশোরী, মহিলা ও পুরুষদের নানা খেলাধুলাসহ কুইজ প্রতিযোগীতা। সেই সাথে ছিলো সকালের নাস্তা, মধ্যাহ্ন ভোজ আর বিকেলে আম-ভর্তা,ঝাল-মুড়িসহ চা-চক্র। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিলো র‌্যাফেল ড্র আর সঙ্গীতানুষ্ঠান।
মধ্যহ্ন ভোজের পর শুরু হয় বিভিন্ন খেলাধুলা। শিশু-কিশোর-কিশোরীদের দৌড়, তরুণদের জন্যে বাংলাদেশকে নিয়ে লিখিত কুইজ প্রতিযোগীতা, মহিলাদের মিউজিক্যাল পিলো পাসিং, পুরুষদের ফুটবলে পেনাল্টি গোল খেলা।
উপস্থিত হয়েছিলেন মার্কস হোম কেয়ার এবং কুইন্স সোস্যাল এডাল্ট ডে কেয়ার-এর দুইজন কর্মকর্তা জিয়াউল হায়দার ও এ কে এম মিরাজ।






বনভোজন কমিটির আহবায়ক মশিউর রহমান মজুমদার ও সদস্য সচিব আবু বকর সিদ্দিক অনুষ্ঠানের সামগ্রিক তদারকি ও বিভিন্ন প্রকার খেলাধুলা পরিচালনা করেন। তাদেরকে সহযোগিতা করেন আহ্বায়ক কমিটির যথাক্রমে ক্লাবের সদস্য সীমা সুস্মিতা, মল্লিকা খান মুনা, এসএম সরোয়ার হোসেন, পাপিয়া বেগম, তাপস সাহা, মোঃ হামিদ, এম এইচ পাহলভি, তোফাজ্জল লিটন, এবং কমিউনিটি এ্যাটিভিষ্ট আবদুর রশিদ বাবু, সেলিম উল্লাহ।

দুই পর্বে খেলা-ধুলার উদ্বোধন করেন বারী হোম কেয়ারের সিইও আসেফ বারি টুটুল ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুদ্দিন আজাদ। বিশেষ করে কুইজ প্রতিযোগিতা, বাচ্চাদের দৌড়, মেয়েদের পিলো পাসিং এবং ছেলেদের গোল প্রতিযোগিতা সবার নজর কাড়ে।

খেলার ফাঁকে আম ভর্তা, ঝাল মুড়ি এবং চায়ের চুমুকে মাতোয়ারা ছিল সবাই। পড়ন্ত বিকেলে শুরু হয় নিউইয়র্কের জনপ্রিয় শিল্পী কৃষ্ণা তিথি ও শাহ মাহবুবের একক ও যৌথ পরিবেশনা। দুই শিল্পীর অনুরোধে যুক্ত হন নন্দিত কন্ঠশিল্পী ও প্রেসক্লাব সদস্য বেবী নাজনীন। শিল্পীদের সাথে সবাই নেচে গেয়ে এবং গানের কন্ঠে গলা মিলিয়ে এক অনন্য উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
সবশেষে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরনী ও র‌্যাফেল ড্র। ক্লাব কর্মকর্তারা ও আগত অতিথিরা বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।
সামারে নিউইয়র্কে রাত ৮টায়ও থাকে দিনের আলো। সূর্য যখর অস্তগামী, দিনব্যাপি আনন্দ-উল্লাস শেষ করে শুরু হয় বাড়ী ফেরার পালা। আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে আগত সবাইকে ধন্যবাদ এবং বিভিন্ন স্পন্সরদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। আগামীতে আবার একত্রিত হবার ইচ্ছা প্রকাশ করে দিনব্যাপী বনভোজনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here