নিউইয়র্কে ৭ মার্চের ভাষণের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

0
162

নিউইয়র্ক থেকে : জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল -এর যৌথ উদ্যোগে কনস্যুলেট জেনারেলের মিলয়াতনে ইউনেস্কোর ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের উপর একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৭ মার্চ বুধবার সন্ধ্যায় সম্মিলিত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এরপর জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানস্থলে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেট জেনারেল এর কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ নেতৃবৃন্দও প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো: আরিফুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন ডেপুটি কনসাল জেনারেল মো: সাহেদুল ইসলাম।

জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের উপর নির্মিত প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন ছিল অনুষ্ঠানের অন্যতম একটি আকর্ষণ।

সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কোর ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান একটি বিরল সম্মান উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “এই ভাষণ আর বাংলাদেশের ভূখন্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এটি এখন সারা পৃথিবীর মানুষের অনুপ্রেরণাদানকারী একটি দলিলে পরিণত হয়েছে যা মানুষকে জাগ্রত রাখবে তাদের দাবী আদায়ের ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছতে”।

তিনি বলেন, “প্রকৃতপক্ষে ৭ মার্চের ভাষণের পরই চুড়ান্তভাবে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। জাতির পিতার ঘোষণা ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয়বাংলা’-তে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছাত্র-যুবক, কৃষক-শ্রমিক, কুলি-মজুরসহ সর্বস্তরের মানুষ সশস্ত্র প্রশিক্ষণ শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশের মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে”।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বে সমুদ্র বিজয়, পদ্মা সেতু নির্মাণ, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন, এমডিজি বাস্তবায়ন, এসডিজি বাস্তবায়নে অগ্রগতিসহ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে নিম্ন-ধ্যম আয়ের দেশে উপনীত হওয়ার মত সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আসুন, আমরা সকলে হৃদয়ে লাল-সবুজের পতাকা ধারণ করে, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করি। বাংলাদেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই”।

আলোচনায় আরও অংশ নেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, শহীদ পরিবারের সন্তান ফাহিম রেজা নুর এবং আকিব হাসান।

বক্তাগণ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ বিশ্ব সম্পদে পরিণত হয়েছে যা প্রতিটি বাঙালির জন্য অত্যন্ত গৌরবের বলে উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রমনার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতার দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here