আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, তাই কোন ভয় পাই না: ড. নীনা

0
101

নিউইয়র্ক থেকে: পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের লে. গভর্নর পদপ্রার্থী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ড. নীনা আহমেদ বলেন, ‘আমি বাংলাদেশী, আমি আপনাদেরই সন্তান। আমি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। তাই আমি কোন ভয় পাই না। অন্যায়ের কাছে আমি কখনও মাথা নত করিনি। আপনারাই আমার সাহস। এই পদে থেকেই আমি কমিউনিটির জন্য লড়তে চাই। আমাকে দেখেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিখবে এবং এই দেশের মূলধারার রাজনীতির সাথে নিজেদের জড়াবে। ১২ মার্চ সোমবার তার সমর্থনে ফিলাডেলফিয়া সিটিতে সর্বস্তরের প্রবাসীদের এক সমাবেশে ড. নীনা এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে আমি মার্কিন সরকারের নানা পদে ছিলাম। গত ২৫ বছর ধরেই আমি পেনসিলভেনিয়ার বিভিন্ন প্রশাসনের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি, নাগরিকদের ন্যায্য দাবি এবং অধিকার আদায়ের জন্য লড়েছি। এখন কমিউনিটির বিভিন্ন অসহায় নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবা, উচ্চ শিক্ষার ব্যয় সংকোচন, স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য পেনসিলভেনিয়ার লেফটেন্যান্ট গর্ভনর পদে লড়তে চাচ্ছি। তাই আপনাদের কাছে আমি আসন্ন প্রাইমারি নির্বাচনে (দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচন) ডেমোক্রেট প্রার্থি হিসাবে ভোট কামনা করছি। আপনারা যদি আমাকে সাহস দেন এবং পাশে থাকেন তাহলে এই জয় আমাদেরই হবে ইনশাল্লাহ।’

আমেরিকান বাংলাদেশি কমিউনিটি অব ওয়েস্ট ফিলাডেলফিয়া’র ব্যানারে স্থানিয় ইন্ডিয়ান সিজলী রেস্টুরেন্টে এ অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন মোহাম্মেদ শহীদ এবং সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক মো. হারিস।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. জিয়াউদ্দীন আহম্মেদ, ডা. ফাতেমা আহম্মেদ, ডা. আব্দুল মালেক, বিশিষ্ট সমাজসেবক মীর হোসেন এবং সৈয়দ সিরাজ।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে ড. নীনার নির্বাচনী প্রচার কমিটির সমন্বয়কারি ড. ইবরুল চৌধুরী বলেন, ‘নীনা একজন বাংলাদেশি, তাকে আপনাদের মাঝে বিশেষ করে ফিলাডেলফিয়াবাসীর কাছে নতুন করে পরিচয় করার কিছুই নাই। সে আমাদের এই ফিলাডেলফীয়া কমিউনিটির প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে অতি আপনজন।’

ইবরুল আয়োজকদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদেরকে সাথে নিয়ে পেনসিলভেনিয়ার লেফটেন্যান্ট গর্ভনর পদে ড. নীনাকে জয়যুক্ত করাতে চাই।’

উত্তর আমেরিকায় নীরব সমাজকর্মী হিসেবে বহৃল পরিচিত এবং একাত্তরের শহীদ পরিবারের সন্তান জিয়াউদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘আজ যেভাবে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্টজনরা দলমতের উর্দ্ধে উঠে নীনার জন্য এগিয়ে এসেছে, তাতে আমি আশাবাদী যে, নিনা আগামী মে মাসের প্রাইমারিতে জয়যুক্ত হবে ইনশাল্লাহ।’

জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘আজ শুধু পেনসিলভেনিয়াতেই নয়, উত্তর আমেরিকার সমস্ত প্রবাসী বাংলাদেশিরা যে যেখানে আছে সবাই নীনাকে এই পদে দেখতে চায়। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্টেট থেকে নীনার তহবিল সংগ্রহের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করা হচ্ছে। আগামী ৩১ মার্চ নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে একটি বড় তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে।’

ডঃ নীনা তার সমাপনী বক্তব্যে এই ফান্ড রেইজ ডিনার আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘নতুন করে ফিলাডেলফিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে পরিচিতি হবার কিছুই নেই। আমি সবসময়ে আপনাদের পাশে আগে যেমন ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।’

অনুষ্ঠানে নীনার পক্ষে কাজের অঙ্গিকার করে আরও বক্তব্য রাখেন ক্মুনিটির বিশিষ্ট জন শাহ ফরিদ, মো. এনাম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, মোহাম্মেদ পাটুয়ারি প্রমুখ।

উল্লেখ্য, মেধাবি বিজ্ঞানী হিসেবে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া ড. নীনা গত ২৫ বছরেরও অধিক সময় ধরে অভিবাসী-সমাজের অধিকার ও মর্যাদা আদায়ের লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন। সর্বস্তরের মানুষের সাথে সম্পর্ক গভীর হওয়ায় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ড. নীনাকে এশিয়ান-আমেরিকান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যও করেছিলেন। এরপর ফিলাডেলফিয়া সিটির ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালনকালেই কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট পিএ-১ থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। সাথে সাথে পদত্যাগ করেন ডেপুটি মেয়রের পদ থেকে।

এরইমধ্যে ড. নীনাকে ঠেকানোর চেষ্টায় তার কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ভেঙ্গে চূর্ন করা হয় অর্থাৎ ড. নীনার ভোট ব্যাংকে চিড় ধরানো হয়। এ অবস্থায়ই তিনি কংগ্রেসে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আশা ছেড়ে দিয়ে আরো বড় পরিসরে অঙ্গরাজ্য লে. গভর্ণর পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here