বাংলাদেশের অন্যতম অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। ২০১০ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় রানার্স আপ হওয়ার মধ্যে দিয়ে অভিনয় জগতের শুরুটা হয়। এরপর নিজের দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা ও ফ্যাশন সচেতনতা দিয়ে অনেকেরই নজর কাড়েন তিনি। প্রিয়.কমের নিয়মিত আয়োজন ‘ফ্যাশন ব্র্যাণ্ড’ বিভাগে নিজের ফ্যাশন, স্টাইল, ভালো লাগার ব্র্যাণ্ড, কেনাকাটা, গেটআপসহ ব্যক্তিগত আরও বিষয় নিয়ে কথা বলেন এই অভিনেত্রী। চলুন জেনে নেওয়া যাক মৌসুমী হামিদের ফ্যাশন, স্টাইল আর পছন্দের ব্র্যাণ্ড সম্পর্কে।
প্রশ্ন: প্রথমেই জানতে চাইবো শপিং নিয়ে কোনো স্মৃতি জড়ানো গল্প?
মৌসুমী হামিদ: ছোটবেলায় একবার জন্মদিনে বাবার সঙ্গে গিয়েছিলেম শপিংয়ে। তখন আমার বয়স ছিল সাত বা আট বছর। সেদিন শপিং সেন্টারটির প্রথম দোকানে, একটি জামা বেশ মনে ধরে গিয়েছিল আমার। কিন্তু ঐ জামাটির দাম অনেক বেশি ছিল বলে আর কিনিনি। চলে যাই অন্য দোকানগুলোতে। এরপর অন্য সব দোকানে গিয়ে নতুন জামা পছন্দ করার চেষ্টা করি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনে ধরে যাওয়া ঐ জামাটি ছাড়া আমার আর কোনো জামাই পছন্দ হয়নি। এরপর হঠাৎ দেখি বাবা আমার জন্য ঠিক ঐ জামাটিই কিনে নিয়ে আসেন। সেই জামাটি এখনো আমি আমার কাছে যত্ন করে রেখে দিয়েছি।
প্রশ্ন: এবারের বৈশাখে পরিকল্পন কী?
মৌসুমী হামিদ: ঐ দিন আমাদের চ্যানেল আইয়ের নববর্ষের প্রোগ্রাম থাকে। তাই সবাই মিলে ওখানেই যাব। আশা করছি, মোটামুটি দুপুর পর্যন্ত ওখানেই থাকা হবে। সবার সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হবে। এরপর বিকালে বন্ধুদের সঙ্গে এদিক সেদিক একটু ঘোরাঘুরি করবো।
প্রশ্ন: এবার জানতে চাইবো আপনার দৈনন্দিন পোশাক- আশাক সম্পর্কে?
মৌসুমী হামিদ: পোশাকের ক্ষেত্রে আমার প্রিয় রং সাদা। সাদাটাই সবচেয়ে বেশি পরা হয়। সাদা টপস, সাদা সালোয়ার কামিজ, সাদা শাড়ি মোট কথা সাদা রঙের পোশাক। ঘোরাঘুরি কিংবা নিজের ব্যক্তিগত কাজে বাসা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে, ওয়েস্টার্ন পোশাকটা বেশি পরা হয়। যেহেতু এখন গরম তাই এ সময় জিন্সের পরিবর্তে গ্যাবার্ডিন প্যান্টটা বেশি পরি। সেই সঙ্গে আরামদায়ক টপস, তা হতে পারে লিলেন কাপড়ের বা অন্য কোনো স্বস্তিদায়ক কাপড়ের। এ ছাড়া শাড়িতে আমকে খুব মানায় বলে শাড়িটাই বেশি পরতে চাই। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলে অবশ্যই প্রাধান্য থাকে আমার শাড়ি। তাছাড়া যেকোনো পোশাকেই আমি খুব সহজে নিজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারি।
প্রশ্ন: জানতে চাইবো ব্যক্তিগত জীবনের বাইরে, আপনার শুটিংয়ের পোশাক সম্পর্কে?
মৌসুমী হামিদ: শুটিংয়ের পোশাকগুলো বেশির ভাগই আমি নিজে গিয়ে কিনি। শুটিংয়ের সময় চরিত্রের ধরণ অনুযায়ী নানা ধরনের পোশাক পরা হয়। অনেক সময় এমনও হয় ধরুন, খুব গ্রামের এক দরিদ্র নারীর চরিত্রে অভিনয় করবো, দেখা গেল ঐ মুহূর্তে ঐ চরিত্রের জন্য ঠিক ওরকম পুরোনো, কুঁচকানো-ছেড়া শাড়ি আমার কাছে নেই। তখন এমনও হয়েছে প্রোডাকশনের কারো মাধ্যমে- আমার সংগ্রহে রাখা কোন নতুন শাড়ি, ঐ গ্রামের কাউকে দিয়ে তার কাছ থেকে একটি পুরনো শাড়ি নিয়েছি। সেই শাড়িটি পরেই দাঁড়িয়ে গিয়েছি ক্যামেরার সামনে। অনেক সময় এমনও হয় সালোয়ার কামিজ সেলাইয়ের জন্য রাস্তায় দাঁড়ানো ভ্যানের উপর থেকেও গজ কাপড় কিনে নিচ্ছি।
প্রশ্ন: সাধারণত কোথা থেকে কেনাকাটা করা হয়?
মৌসুমী হামিদ: আমি মোটামুটি সব জায়গা থেকে কেনাকাটা করি। তেমন কোনো নির্দিষ্ট দোকানের প্রতি আকর্ষণ নেই। কখনো ‘অরণ্য’ থেকে কিনছি, কখনো বা ‘যাত্রা’ থেকে কিনি আবার ‘আড়ং’ থেকে, ‘আর্টিসান’ থেকেও কিনি এছাড়া অন্যান্য সব জায়গা থেকেই কম বেশি কেনাকাটা করা হয়। ভালোলেগে গেলে অনলাইন দোকানগুলো থেকেও কেনা হয়। এরকম নয় সব সময় একই জায়গা থেকেই কেনাকাটা করি। দেশের বাইরে গেলে যদি ভালো গাউনের মতো বা একটু অন্য ধরনের কোন সুন্দর পোশাক চোখে পড়ে, তখন ওখান থেকেও কিনি।
প্রশ্ন: কীসের প্রতি সবচেয়ে বেশি ফ্যাসিনেশন?
মৌসুমী হামিদ: আমি খুব জুতা ফ্রিক। চোখে কোনো জুতা ভালো লাগলেই কিনি ফেলি। জুতা কিনতে ভালো লাগে বলে সব ধরনের জুতাই আমার কছে আছে। অনেকেই বলে আমি একটু টম বয় ধরনের। কনভার্সটা বেশি পরা হয়। আমি একটু আরম প্রিয় বলে হাইহিল জুতা খুব একটা পরা না হলেও সংগ্রহে ঠিকই রাখা আছে।
প্রশ্ন: সব শেষে জানতে চাইবো মেকআপ সম্পর্কে?
মৌসুমী হামিদ: শুটিংয়ের সময় চরিত্রের স্বার্থে কখনো একটু ভারি মেকআপ করতে হয়, কখনো বা হালকা মেকআপ নিতে হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে লিপস্টিক ছাড়া মেকআপ খুব একটা নেওয়া হয় না।
সূত্র : প্রিয় ডট কম