আজ পবিত্র শবেবরাত। আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং গুনাহ থেকে ক্ষমা পেতে মুসলমানদের জন্য এটি মর্যাদাপূর্ণ রজনী।
পবিত্র রজনী শবেবরাত উপলক্ষে এরই মধ্যে রাজধানীসহ সারা দেশের মসজিদে ও কবরস্থানে যাওয়া শুরু করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং গুনাহ থেকে ক্ষমা পেতে নফল এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। নফল নামাজের পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া ও মোনাজাত করে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করবেন তারা। মর্যাদাপূর্ণ শাবান মাসের মাঝামাঝি এ পবিত্র রজনীতে নফল এবাদত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন আলেমরা। তবে শবেবরাতের সুনির্দিষ্ট কোনো নামাজ নেই।বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম এনটিভিকে বলেছেন, ‘আমরা এই রাতে অধিক পরিমাণে এবাদত বন্দেগি করব। তবে সেই সাথে অবশ্যই লক্ষ্য রাখব, এবাদত করতে গিয়ে নিজেদের মনগড়া কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করব না। যেইভাবে কোরআন এবং হাদিসে এসেছে সেভাবে আমরা এবাদত বন্দেগি করব। যেকোনো সুরা দিয়ে যেকোনোভাবে নামাজ পড়লেই হবে, কোনো সমস্যা নেই।

এবাদত ছাড়া এ রাতে আতশবাজি কিংবা হালুয়া রুটির আয়োজনসহ যেকোনো জাকজমকপূর্ণতার আয়োজন করা সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে ইসলামে।

মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম বলেন, ‘আমি এলাকার মাইক ব্যবহার করে এরকমভাবে জিকির করতে শুরু করব ওই এলাকায় যত মা-বোন আছে, ছোট বাচ্চা আছে সবার ঘুম হারাম হয়ে গেল, সকলের এবাদত বন্দেগি নষ্ট হয়ে গেল, এটা করা যাবে না। আতশবাজি ফুটিয়ে বা এই ধরনের চিল্লাচিল্লি এবাদতের বিঘ্ন ঘটানোর তো প্রশ্নই আসে না।

মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম আরো বলেন, ‘মা-বোনদের দেখা যায়, এই রাতে হালুয়া-রুটি তৈরিতে তারা ব্যস্ত থাকে। এটা একেবারেই ইসলামের সাথে এর সম্পর্ক নেই। যেটা এবাদত না, সেটাকে এবাদত মনে করলে অবশ্যই গুনাহ হবে।’

তবে এ রাতেই মানবজাতির ভাগ্য নির্ধারণ করা হয় এ বিষয়ে একমত নন আলেমগণ।

রাতব্যাপী এবাদত, বন্দেগি, জিকির ছাড়াও এই পবিত্র রাতে মুসলমানরা মৃত বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনসহ প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করে থাকে। এরই মধ্যে কবরস্থানগুলোতেও মুসল্লিদের ভিড় দেখা গেছে।

মহিমান্বিত এ রজনী ভাবগম্ভীর পরিবেশের মধ্য দিয়ে পালনের লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আজ রাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে ওয়াজ মাহফিল, কোরআন তিলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল, হামদ, নাত, নফল ও তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় এবং আখেরি মোনাজাত।

পবিত্র এ রাতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদ সারা রাত খোলা থাকবে। বাদ ফজর দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর রহমত কামনায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে পবিত্র লাইলাতুল বরাতের সমাপ্তি হবে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ উপলক্ষে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

পবিত্র শবেবরাত সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে ঢাকা নগরীতে আতশবাজি, পটকা ফাটানো এবং যেকোনো ধরনের বিস্ফোরকদ্রব্য বহন নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here