একটি দুনীতি মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাসের নব্বই দিন পূর্ণ হচ্ছে আজ। তিন মাসের এই জেল জীবনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে তার স্বজন ও দলের নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়া নিজেও আইনজীবীদের মাধ্যমে তার অসুস্থ্রা কথা আদালতকে বলতে বলেছেন। এদিকে গতকাল খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি শুরু হয়েছে। আজ আবারও শুনানি হবে। তার জামিন পাওয়া না পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে আদালতের উপরে।

ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার নামে কুমিল্লা আদালতে পেট্রোলবোমা হামলা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। গতকাল নড়াইলের আদালতে একটি মানহানির মামলায় তার জামিন নামুঞ্জুর করা হয়েছে। ফলে এই মামলায় যদি তিনি জামিন পান তারপরও সহসাই তারা কারমুক্তি মিলছে না। তবে তার আইনজীবীরা মনে করেন এই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আর এই মামলায় তিনি জামিন পেলে অন্য যেসব মামলা রয়েছে সেসব মামলায় জামিন পাওয়া সহজ হবে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম এসব কথা জানান। তিনি বলেন, ম্যাডাম এসব মামলায় জামিন না পেলে বরং তা নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

গেল সপ্তাহ খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জানান, খালেদা জিয়া নিয়মতান্ত্রিক যে আন্দোলন চলছে তা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে আপাতত খালেদা মুক্তির যে আন্দোলন চলছে তাতে পরির্বতন আসছে না। তবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ গেল সপ্তাহে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে বলেছেন রোজার পরে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির কথা বলেছেন। দলের নীতির্নিধারনী ফোরামের অন্যতম নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের ধরণ পরিবর্তন হতে পারে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। আর খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা এখনও আশা করছি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিন পাবেন। কারণ এ মামলার কোনও ভিত্তি নেই। সরকার রাজনৈতিক কারণে তাকে সাজা দিয়েছে এবং আটকে রেখেছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর থেকে তারই নির্দেশনায় শান্তিপূর্ন অহিংস কর্মসুচি পালন করে আসছে বিএনপি। কর্মসুচি পালনে প্রশাসনের বাঁধার মুখে পড়তে হচ্ছে আবার কখনো কখনো অনুমিত না পেয়ে কর্মসূচি পালন করতে পারছে না দলটি। এসবের মধ্যেও গত তিন মাসে তার মুক্তির দাবিতে কয়েক দফায় বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এসব কর্মসূচির মধ্যে স্বাক্ষর সংগ্রহ, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন, কালো পতাকা প্রদর্শন, স্বারকলিপি প্রদান ও ঘরোয়া আলোচনা সভা ও সমাবেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হয়েছে দলটি। কর্মসূচি পালনে রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে রাজধানীতে। সোহরাওর্য়াদী উদ্যানে তিন দফায় সমাবেশ করতে চাইলেও প্রশাসনের অনুমতি না পেয়ে করতে পারেনি দলটি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here