এই সময়ের জনপ্রিয় রসালো ফল তরমুজ। আয়েশ করে তরমুজ খেয়ে তার খোসা আর বীজ আমরা ফেলে দিই। কিন্তু এর বীজে যে কী পরিমাণ উপকার, তা জানা থাকলে আর কখনোই বীজ ফেলে দিতে মন চাইবেনা। জেনে নিই তরমুজের বীজের সব গুণাগুণ:
এক কাপ তরমুজের বীজ খেলে শরীরে দারুণ শক্তি পাওয়া যায়। হঠাৎ করে ভালো না লাগে, কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয় বা বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে- এমন অবস্থায় তরমুজের বীজ খেতে হবে। এতে করে শরীরের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। তবে বেশি মাত্রায় এই বিচি খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে করে ওজন বাড়ার ভয় থাকে।
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি
তরমুজের বীজে থাকা ম্যাগনেসিয়াম চুলের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। এছাড়া চুলের গোড়াকে শক্ত করে চুল পড়া কমে যায়। চুলে পুষ্টি জোগায় বলে চুল সতেজ আর ঝরঝরে হয়ে যায়। ফলে চুল সুন্দর হয়। তাই চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে তরমুজের বীজে ভরসা রাখতে পারেন।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে
তরমুজের বীজের ম্যাগনেসিয়াম হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমে যায়। ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও এই বীজে রয়েছে সিটরুলিন উপাদান। এই উপাদান অ্যারোটিক ব্লাড প্রেসার কমায়, হার্টকে চাঙ্গা রোখে। যাদের জেনেটিক্যালি হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য তরমুজের বীজ দারুণ কার্যকর।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়
তরমুজের বীজে থাকা জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়াম হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে বদহজম এবং গ্যাস-অম্বলের সমস্যা অনেক কমে যায়। ফলে খাওয়ার রুচি ভালো থাকে। নিয়মিত খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে
পরিমাণ মতো তরমুজের বীজ নিয়ে হালকা ভেজে খেলে শরীরে আয়রন এবং ভিটামিন বি-এর ঘাটতি দূর হয়। অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতায় ভুগলে এই বীজ বেশ কাজে লাগে। কারণ আয়রন শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়ায়। অন্যদিকে ভিটামিন বি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়
ত্বকের কোলাজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে স্কিন টোনের উন্নতিতে তরমুজের বীজ ভালো কাজে লাগে। এই গ্রীষ্মের গরম আর বৃষ্টির আবহাওয়াতে ত্বকের ভারসাম্য রক্ষায় তরমুজ এবং তরমুজের বীজ নিয়মিত খেতে পারেন। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে এই বীজ।
বন্ধ্যাত্ব সমস্যার সমাধান
প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে তরমুজের বীজ খুবই কার্যকর। এই বীজে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় জিঙ্ক। যা স্পার্ম কাউন্ট বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলে গর্ভধারণ এবং প্রজননের ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো দূর হয়।
মস্তিস্কের সমস্যা দূর হয়
তরমুজ বীজের ম্যাগনেসিয়াম মস্তিস্ককে সচল করে রাখে। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম স্মৃতিশক্তির বাড়িযে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে একসময়ে অ্যালঝাইমারস রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই সহজেই তরমুজের বীজ খেতে চেষ্টা করুন।
ডায়াবেটিস থেকে দূরে রাখে
তরমুজের বীজ শরীরে প্লাজমা গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে এতে থাকা ওমেগা-৬ ফ্য়াটি অ্যাসিড ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। আর তার ফলে ডায়াবেটিসকে অনেকটাই দূরে সরিয়ে রাখা যায়।