বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অনন্ত বিজয় দাশ স্মরণে আলোক প্রজ্জ্বলন করা হয় ১২ মে সন্ধ্যা ৮টায় জ্যাকসন হাইটসে। অনন্ত হত্যার তিন বছর উপলক্ষে নিউইয়র্কের মুক্তচিন্তার প্রবাসীরা এই আয়োজন করে। প্রবীন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লার সভাপতিত্বে কর্মসূটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক ও নাট্যকার তোফাজ্জল লিটন। খুনিদের বিচার চেয়ে এতে বক্তব্য রাখেন একটিভিস্ট মুজাহিদ আনসারি , শিতাংশু গুহ, জাকির আহমেদ রনি , সাংস্কৃতিকর্মী গোপাল স্যান্যাল, মাহতাব সোহেল, শিবলী সাদিক, শুভ রয়, এবং ব্লগার সুজন করিম।
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত প্রথম সাপ্তাহিক প্রবাস এর সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, মুক্ত চিন্তার প্রসারের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলতে হবে। অনলাইনে অসাম্প্রদায়িকতা এবং মানবতার কথা বলতে হবে প্রত্যেকের নিজের জায়গা থেকে।
সাংবাদিক এবং একটিভিস্ট মুজাহিদ আনসারি বলেন, ধর্মান্ধ উগ্র মৌলবাদীরা সব সময় চিন্তাশীল ব্যক্তিদেও নানান নামে অপবাদ দিয়ে হত্যা করেছে। আগে তারা মানুষ হত্যা করতো মুরতাদ নাম দিয়ে এখন করে নাস্তিক নাম দিয়ে। এতো মানুষ হত্যা করের তারা বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। বাংলাদেশ আজ মহাকাশে চলে গেছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে কেউ রুখতে পারবে না।যদি অননন্ত হত্যার বিচার না হয় যদি অনন্তরা হেওে যায় তবে বাংলাদেশ হেওে যাবে। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ যেভাবে মাথা উচু কওে দাঁড়িয়েছে সেই বাংলাদেশ হেওে যেগে পাওে না।
মানবাধিকার কর্মী শিতাংশু গুহ বলেন বিচার চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যারা মুক্ত চিন্তা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং মানবিক বিশ্বের স্বপ্ন দেখে তাদেরকে সহযোগীতা করতে হবে। নিজের জায়গা থেকে অর্থনৈতিক ভাবে এবং সামাজিক ভাবে তাদেও পাশে থাকতে হবে।


ঢাকা গণজাগরণ মঞ্চর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক জাকির আহমেদ রনি বলেন, মৌলবাদের কালো থাবায় বারবার বিপর্যস্ত হয়েছে মুক্তচিন্তা। অভিজিৎ রায়কে খুনের পর ধর্মান্ধদের চাপাতির আঘাতে ধারাবাহিকভাবে খুন হয়েছেন ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নীল, ফয়সাল আরেফীন দীপন, নাজিমুদ্দিন সামাদ, অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী, জুলহাস মান্নান, মাহবুব তনয়সহ অনেকে। যতদিন পর্যন্ত এসকল হত্যাকান্ডের বিচার না হবে আমরা ততো দিন পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্নভাবে বিচারের দাবি জানিয়ে যাবো।
ব্লগার সুজন করিম বলেন, আমি নাস্তিক হলেই কী আমাকে মেরে ফেলতে হবে ? আর মেরে ফেলার পর রাষ্ট্র যদি সেই বিচার না করে তাহলে সেই উদ্র মৌলবাদীদের সঙ্গে রাষ্ট্রের পার্থক্য কী । আমি কারো কাছে কিছুর বিচার চাই না। আমি চাই অনন্তরা যে সমাজ পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছিলেন তা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশে মানবতা এবং যুক্তিবাদ প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের অগ্রপথিক, বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক, বিজ্ঞান পত্রিকা ‘যুক্তি’র সম্পাদক অনন্ত বিজয় দাশ। যাকে নৃশংসভাবে মৌলবাদীদের হাতে খুন হতে হয়েছে তার ভিন্নমতের কারণে। ২০১৫ সালের ১২ মে, সিলেটে ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীর চাপাতির আঘাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন অনন্ত বিজয় দাশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here