প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেছেন, “বার বার কেন তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ভারতে যাচ্ছেন, জনগণের মধ্যে নানা গুঞ্জন আছে।”

শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের মধ্যে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ।

বিএনপির বিভিন্ন নেতা দাবি করে আসছেন, আওয়ামী লীগ ভারতের সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশে ক্ষমতায় রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এবারের সফরের উদ্দেশ্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন ও বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন এবং কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে যোগ দেওয়া।

গত বছর দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী মৃত্যুতে তাকে সান্ত্বনা জানাতে গিয়েছিলেন তিনি।

তার আগের বছর ব্রিকস সম্মেলনের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে সফরে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর সফরেও ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বার্থ উদ্ধার হচ্ছে না বলে দাবি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ।

তিনি বলেন, “আমরা প্রত্যেকবারই প্রত্যাশা করেছি যে, এদেশের মানুষের মরা-বাঁচার সম্পর্ক হচ্ছে পানি, সেই তিস্তা নদীর পানি সমস্যার সমাধান হবে। এত বার তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ভারতে গেলেন, তিস্তা চুক্তির বিষয়টি আলোচ্য সূচিতে পর্যন্ত আনতে পারেননি।”

বর্তমান সরকারের পেছনে জনগণের সরকার নয় দাবি করে মোশাররফ বলেন, সেই কারণেই তারা মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “তিনি (প্রধানমন্ত্রী) শান্তিনিকেতনে আনন্দ ভ্রমণ করছেন। কোনো আলোচ্যসূচি নেই, কোনো ধরনের এজেন্ডা নেই, প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়ে খোশ গল্পে এই রমজান মাসে সঙ্গীত উপভোগ করছেন। এটি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাচ্ছিল্য করা। এটা দেশের জনগণকে অবমাননা করা।”

তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “যদি বুঝতাম, এক বালতি তো বলেছিলাম সেদিন, এক বাটি তিস্তার পানি নিয়ে আসতে পারতেন, তাহলে বুঝতাম একটা কাজ করেছেন।

“এতই তার অনুরাগ ওই দেশের প্রতি। তাদের সবই দিয়ে যান। কোন কৃতজ্ঞতা বশে সেটি দিয়ে যাবেন, সেটা মনে হয় জনগণ জানে।”

‘গডফাদারদের আড়াল করতে হত্যা’

মাদকবিরোধী অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘হত্যাকাণ্ডের’ সমালোচনা করে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ বলেছেন, মাদকের ‘গডফাদারদের আড়ালে রাখতে’ এই কাজ করা হচ্ছে।

“মাদক অভিযানের নামে যাদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, উদ্দেশ্য একটাই গডফাদারদের নাম ধামাচাপা দেওয়ার জন্য। দেশের সাধারণ মানুষ সকলে জানে, মাদকের সম্রাট কারা। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (বিশেষ দূত) হুসেইন মো. এরশাদও বলেছেন, সংসদেই মাদকের গডফাদার আছে।

“তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অথচ যারা ছোট-খাটো ক্যারিয়ার তাদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করে বাহাদুরি দেখানো হচ্ছে।”

বিএনপি মাদকবিরোধী অভিযানের বিপক্ষে নয় জানিয়ে মোশাররফ বলেন, “আমরা পদ্ধতির বিরোধিতা করি। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হোক, তাদেরকে আইনের কাছে সোপর্দ করা হোক। তাদের গডফাদার কারা, তা জিজ্ঞাসাবাদে বের করা হোক।”

তা না হলে মাদকবিরোধী অভিযান সফল হবে না বলে মনে করেন এই বিএনপি নেতা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here