শনিবার দুপুরে গুলিস্তান নাট্যমঞ্চে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চ আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি যদি এদেশে পুনরায় ক্ষমতায় আসে তবে দেশেকে নিয়ে যাবে পকিস্তানের ধারায়। বয়ে যাবে রক্তের নদী, দেশ হবে ভয়ঙ্ককর লাশের পাহাড়। জনগণকে ছাড়তে হবে আবার তাদের বাড়িঘর। দেশ হবে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের লীলাভূমি।
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির লোকেরা মহিলাদের ধর্ষণ করেছিলো। পুকুরে বিষ ঢেলে মাছ মেরে ফেলেছিল। বাবা মারা গেছে ছেলে গ্রামে গিয়ে বাবার জানাযা পড়েতে পারেনি, তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল। সেই ইতিহাস কি আপনারা ভুলে গেছেন? বিএনপি ক্ষমতায় এসে গ্রামে গ্রামে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলো।
কাদের বলেন, দেশে আর ২০০১ সালের মত নীলনকশা মার্কা নির্বাচনের স্বপ্ন সফল হবে না। ২০০১ সালের মত যেন নির্বাচন না হতে পারে, ২০১৩-১৪ সালের মত যেন আগুন সন্ত্রাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে না হয় সেজন্য সকল মুক্তিযোদ্ধাকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আবারও শেখ হাসিনাকে নির্বাচনে জয়ী করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করেন বলেন, সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির বিষবৃক্ষ উৎঘাটন করতে হলে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সকল ভোদাভেদ ভুলে গিয়ে এক হতে হবে। শেখ হাসিনাকে নির্বাচনে জয়ী করতে হবে।
সকালে রাজধানীর বনানীস্থ সেতুভবনে বাংলাদেশের নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য স্বাক্ষাতে কাদের বলেন,কোটা সংস্কার আন্দোলন কিংবা কোটা সমস্যা সমাধানে সরকার এখন পর্যন্ত সরকার রাইট ট্র্যাকে আছে। আমার মনে হয় বিষয়টা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
এজন্য একটা কমিটি গঠন হয়েছে। মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নেতৃত্বে এই কমিটি খোঁজখবর নিচ্ছে। অন্যান্য দেশেরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। আমার মনে হয় বিষয়টা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা আছেন আমি তাদের অনুরোধ করবো ধৈর্য্য ধরার জন্য। প্রধানমন্ত্রী যে স্টেপ নিয়েছেন সে পদক্ষেপের প্রতি আস্থা রেখে আরেকটু ধৈর্য্য ধরতে অনুরোধ করবো।
কোট সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,আইন শৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীর যেটা বক্তব্য, ভাইস চ্যান্সেলরের বাড়িতে যে ঘটনাটি ঘটেছে, যে নারকীয় তান্ডব, তার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকেই কেবল তারা খুঁজে খুঁজে গ্রফতার করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সাথে গবীর সম্পর্ক তুলে ধরে আছে উযল্লেখ করে বলেন, ক্ষেত্রে কোন বিতর্কে আমি যেতে চাই না। আগের যেনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সুদৃঢ়। রোহিঙ্গা সঙ্কটে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন মানবিকতার দরজা খুলে দিয়েছিলেন তখন থেকেই ওয়াশিংটন আমাদের পাশে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ সংকটে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই মানবিক ভূমিকা বপালন করছে। আমরা পরিবেশগত-অর্থনৈতিক বিভিন্ন ভাবে আমরা আক্রন্ত হচ্ছি। এগুলো মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আমাদের শক্তি ও প্রেরণা যোগাচ্ছে। বন্ধু দেশ হিসেবে তাদের এ সমস্ত উদ্যোগ আমরা ডিপলি অ্যাপরিশিয়েট করি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখনও যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভূমিকায় অটল আছে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী হচ্ছে। কাজেই আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কে আমাদের কোন ঘাটতি নেই।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি ওবায়দুল কাদের বলেন: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নিয়ে যে কথা বলেছি যেন আমাদের দু’দেশের জনগণের মধ্যে কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া না হয়। বন্ধুত্বের মধ্যে কোন ধরণের ফাঁটল না ধরে। আমি ডিপ্লোমেটিক ওয়েতেই কথা গুলো বলেছি। এখানে আমেরিকাকে অ্যাটাক করে বা ওয়াশিংটনকে অ্যাটাক করে বা ওয়াশিংটনের রাষ্ট্রদূতের ভূমিকাকে কোন প্রকার সমালোচনা আমি করতে যায়নি। আমি বলেছি দু’দেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্কটা কিংবা বন্ধুত্বের সম্পর্কে ছেদ হয় এসব কিছু থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত।