রিজার্ভ চুরির বিভিন্ন তদন্ত সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সব তথ্য-উপাত্ত ফিলিপাইন সরকারকে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বুধবার (২৯ আগস্ট) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে ফিলিপাইন সরকার এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যা কিছু ছিলো সবই তাদেরকে দেয়া হয়েছে।

রিজার্ভ চুরির বিষয়ে মামলা করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখনো মামলা করা হয়নি। তবে নিউইয়র্কে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কাজ করছে।’

এদিকে বিশ্বব্যাপী আলোচিত বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে ফিলিপাইন সরকার। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে চিঠি দিয়েছেন দেশটির অর্থ সচিব। ফিলিপাইনস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে এ চিঠি পৌঁছানো হয়।

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনার ব্যাপারে তাদের দেশের বিচার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রয়োজন বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। আরও বলা হয়, রিজার্ভ চুরির ঘটনাটি যে হ্যাকিং ছিল, তা নিশ্চিত করার জন্য অন্তত একটি এফিডেভিট প্রয়োজন বলে মনে করছে ফিলিপাইন সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই চিঠির জবাব দেয়া হবে। তবে তদন্ত প্রতিবেদনটি দেয়া হবে না। সেক্ষেত্রে রিজার্ভ চুরির বিভিন্ন তদন্ত সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংযুক্ত করে জবাব দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সংরক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি করে নেয় দুর্বৃত্তরা। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সংরক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থের মধ্যে প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার (২৪৪ কোটি টাকা) গেছে সোলারি ক্যাসিনিওতে।

এ অর্থ ফিলিপাইনের উচ্চ আদালতের নির্দেশে জব্দ আছে। পরবর্তী সময়ে আদালত প্রত্যাহার করে নেয় ওই নির্দেশ। এরপর এই টাকা পুনরায় ফিলিপাইনের সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে। আর ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার এবং আরসিবিসি ব্যাংকে জমা থাকা ৭০ হাজার ডলারও ফেরত পাওয়া গেছে।

বাকি অর্থ ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলাটি দায়ের করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তর্জাতিক আদালতের আইন অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতির দাবি তুলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বাংলাদেশকে মামলা করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here