আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া থেকে আসা আরও দেড় হাজার কেজি গাঁজা জাতীয় নেশাদ্রব্য ধরা পড়েছে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে।
এই চালানে মোট এক হাজার ৬০০ কেজি পাতাভর্তি ৯৬টি প্যাকেট আসে বলে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম এন্ড হোমিসাইডাল ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানিয়েছেন।

তিনি  বলেন, “এখন পর্যন্ত এটি সবচেয়ে বড় চালান। একাধিক নামে চালানটি আসে।”

এ ধরনের নেশাদ্রব্য বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়েছিল গত ৩১ অগাস্ট। সেদিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো গুদাম এবং শান্তিনগরের এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে আটশ কেজি নেশাদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

এরপর ৮ সেপ্টেম্বর শাহজালালে আসা কয়েকটি কার্টন থেকে পাওয়া যায় আরও ১৬০ কেজি একই ধরনের নেশার পাতা।

সোমবার শুল্ক গোয়েন্দারা ১৬০ কেজির একটি চালান আটকের খবর শুল্ক গোয়েন্দারা দেওয়ার পর সিআইডি দেড় হাজার কেজির চালান আটকের খবর দিল।

জান্নাত আরা বলেন, “বিমানবন্দরের ফরেন পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এই চালানটি আসার খবর পেয়ে আমরা গত বৃহস্পতিবার কার্গোতে যাই। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আমাদের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হই যে এটা মাদক।

“এই এনপিএস (নিউ সাইকোঅ্যাকটিভ সাবসটেন্স) এ ফেনেথাইলামাইন পাওয়া গেছে। এটা সেবনে মানুষের শরীরে ইয়াবার মতো উদ্দীপনা জাগায়, যা ক্ষতিকর।”

চায়ের পাতার মতো দেখতে মাদকের এই চালানটি ইথিওপিয়া থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন জনের নামে এসেছিল জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

এই চালানটি ধরা পড়ে গত শনিবার এই চালানটি ধরা পড়ে গত শনিবার মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কাথ শ্রেণিভুক্ত এক ধরনের উদ্ভিদ থেকে তৈরি এই নেশাদ্রব্য আফ্রিকার দেশগুলোতে বহু আগে থেকেই প্রচলিত। তবে ইদানিং বিভিন্ন দেশে হেরোইন বা ইয়াবার মতো মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ভেষজ নেশার পাতা।

এ ধরনের বিকল্প নেশাদ্রব্যগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে ‘নিউ সাইকোট্রফিক সাবটেনসেস’ বা এনপিএস নামে।

অধিদপ্তরের কেমিকেল এক্সামিনার আবু হাসান বলেন, “বাংলাদেশে এই ধরনের নেশাদ্রব্য নতুন। এক সময় আফ্রিকার দেশগুলোতে ব্যবহৃত হলেও ইদানিং এ নেশা ইউরোপ, আমেরিকাতেও ছড়িয়ে পড়ছে।”

শুকনো ওই নেশার পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে আবার কখনও পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। ওই পাতায় থাকা ক্যাথিনোন ও ক্যাথিন অ্যালকালয়েড থাকে বলে ইয়াবার মতই নেশা হয় বলে আবু হাসান জানান।

তিনি বলেন, “এই নেশাদ্রব্য যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে বা দীর্ঘ সময় জেগে থাকতে সাহায্য করে বলে ধারণা করা হয়। তবে এটি সেবনে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here