জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদে দুই সপ্তাহব্যাপী চলমান এক অধিবেশনে ইইউর পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি তোলা হয়। গত মাসে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের এক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের ইউরোপের প্রভাবশালী সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ পদক্ষেপ নেয়া হল।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গণহত্যার উদ্দেশ্যেই রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান চালিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ভয়াবহ গণহত্যায় নেতৃত্ব দেয়া দেশটির সেনাপ্রধান মিং অং হ্লাইংসহ শীর্ষ ছয় জেনারেলকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের জন্য সুপারিশ করা হয়। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার পরিষদে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টটি প্রকাশ করা হবে।
ইইউর খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘনে দায়ীদের জরুরি ভিত্তিতে বিচার করতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন ফৌজদারি আদালতের মাধ্যমে এই বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে।’
আরও বলা হয়, হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার প্রক্রিয়া মিয়ানমারকে অবশ্যই মানতে হবে।
এর আগে সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাসেলেট দোষীদের বিচারে জাতিসংঘকে নতুন কমিটি গঠন ও প্রস্তাব পাসেরও অনুরোধ করেন।
গত সপ্তাহেই আদালত (আইসিসি) এক রায়ে জানিয়েছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে বিচার করার এখতিয়ার তাদের রয়েছে। এক্ষেত্রে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে বিতাড়ন গণহত্যা সম্ভাব্য উপাদান কিনা তা খতিয়ে দেখবে সংস্থাটি।
ইতিমধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ শুরু করেছে আইসিসির বিশেষ আইনজীবী ফাতো বেনসুদা। তবে মিয়ানমার আইসিসির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিচারের এখতিয়ার আইসিসির নেই।
এর আগে বৃহস্পতিবার ইইউর পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান কূটনীতিক ফেদেরিকো মোঘেরিনি বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা বিবেচনায় নিয়ে মিয়ানমারের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এক্ষেত্রে দেশটির সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট শীর্ষ দুটি কোম্পানির ওপর সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তা করছে অর্থনৈতিক জোটটি।