অবশেষে ভুটানের মাঠে টানা ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে এলে বাংলাদেশের ফুটবল। রোববার সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ মহিলা ফুটবলের ফাইনালে নেপালকে ১-০ তে হারিয়ে প্রথমবার আয়োজিত এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। ম্যাচের ৫০ মিনিটে মাসুরা পারভীনের গোলে লাল-সবুজরা এখন সাফ সেরা।
অথচ আগস্টেই থিম্পুর এই চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবলের ভারতের কাছে ট্রফি হারায় গোলাম রাব্বানী ছোটনের দল। এবার ফাইনালে ভারতকে না পেলেও নেপাল বধের মাধ্যমে লাল-সবুজের উল্লাস মাঠ ও গ্যালারী জুড়ে। বাংলাদেশ এবার শিরোপার সাথে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও জিতেছে। সিরাত জাহান স্বপ্না ৮ গোল করে এই ট্রফি জয় করেন।

তুমুল লড়াই করার জন্য খ্যাতি আছে নেপালীদের। ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেভাবেই শুরু নেপালের। মারজিয়ার বদলে খেলতে নামা লাল-সবুজদের স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্নাকে কড়া মার্কিংয়ে রাখে তারা। মিডফিল্ডে সুবধিা করতে দিচ্ছিলনা মারিয়া, মনিকাদের। নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না অধিনায়ক মৌসুমী ও সানজিদা। এরপরও ৭ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। রুপনা চাকমার গোল কিক থেকে মাঝ রেখার কাছে ফাঁকায় বল পান কৃষ্ণা রানী সরকার। তার সামনে শুধুই নেপালী গোলরক্ষক। বল নিয়ে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপর এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল জালে পাঠাতে গিয়ে তিনি মারেন বাইরে। অথচ তিনি যতটুকু সময় পেয়েছিলেন তাতে গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল জালে পাঠাতে পারতেন।

২২ মিনিটে আরেকটি ভুল করেন অনূর্ধ্ব -১৬ জাতীয় দলের সাবেকই অধিনায়ক কৃষ্ণা । বল ফাঁকায় দাঁড়ানো স্বপ্নাকে না দিয়ে নিজেই মারেন গোলরক্ষক সোজা। এর আগে ১৫ আঁখি খাতুন মিস করেন গোল। এই অর্ধে নেপাল দুটি হায় চান্স পেলেও তা থেকে গোল আদায় করতে পারেনি।

বিরতির পর পরই লিড বাংলাদেশের। মনিকা চাকমার নেয়া ফ্রি-কিকে ডিফেন্স থেকে উঠে আসা মাসুরা পারভীনের হেড গড়িয়ে গড়িয়ে চলে যায় জালে। অবশ্য পরের মিনিটেই সমতার খুব কাছে চলে যায় নেপাল। আঁখি খাতুনের দৃঢ়তায রক্ষা। ফ্রি-কিক থেকে আসা বলে গোলরক্ষক রুপনা চাকমা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। তাতে এক নেপালী ফুটবলারের নেয়া ভলি পোস্টে লাগার পর ক্লিয়ার করেন আঁখি। লিডের পর কিছুটা রক্ষনাত্মক হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এই সুযোগে ৭৪ মিনিটে নেপালের পাওয়া সুযোগ নষ্ট করেন মনীষা। তার শট বার ঘেঁষে চলে যায়। একটু ফাটলও দেখা যায় ছোটন বাহিনীর ডিফেন্স লাইনে। নেপালীরা এই সময়ে অলআউট অ্যাটাকে গেলে বাংলাদেশ কাউন্টার অ্যাটাকে বিপক্ষ রক্ষনভাগ ভাঙার চেষ্ঠা করে। অবশ্য তাতেও ব্যবধান বাড়েনি।

আসরের সব কটি ম্যাচ জিতেই ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে দিয়েছে ২৩ গোল। এই নেপালকে হারিয়েই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। আর ফাইনালেও বাংলাদেশের সামনে দাড়াতে পারেনি হিমালয় কন্যারা। ফলে দেশের ফুটবল সমর্থকদের আরো একবার আনন্দে ভাসাল অনূর্ধ-১৮ নারী ফুটবলাররা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here