বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন-২০১৮ ॥ সবার দৃষ্টি আদালতে

0
111

হককথা : বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র এবারের নির্বাচন ঘিরে মামলা পরবর্তী পরিস্থিতিতে কমিউনিটিকে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব আর দূরত্ব ক্রমশ; বাড়ছে। সেই সাথে নেতৃন্দের মধ্যকার পরষ্পর বিরোধী ‘অপত্তিকর’ বক্তব্যে কমিউনিটিতে মিশ্র প্রক্রিয়া দেখ দিয়েছে। অপরদিকে আদালতের রায়ে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় সোসাইটির নর্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্যানেল ও প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা থমকে গেছে। মামলার পর অনেকের মাঝে হতাশা লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে নির্বাচন স্থগিতাদের পর ৩০ অক্টোবর মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত থাকায় এখন সবার দৃষ্টি মঙ্গলবার। এই সপ্তাহের ৩০ অক্টোবর অর্থাৎ মঙ্গলবার আদালাতের রায় অথবা সিদ্ধান্তের উপর সোসাইটির নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এবং আদালত যদি নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে রায় দেয় সে ক্ষেত্রে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি)-এর কমপক্ষে দুই মাস সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সোসাইটির এবারের নির্বাচনে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের দুজন সদস্য প্রার্থীর মনোনয়ন নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বাতিল হওয়ার প্রেক্ষিতে তাদের মনোনয়ন বৈধতা এবং অপর একটি প্যানেলের সিনিয়র সহ সভাপতির মনোনয়নপত্র বাতিলের দাবীতে রোববারের নির্বাচনের উপর স্থগিতাদেশ জারি জন্য সংশ্লিটরা গত ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার আদালতের স্মরণাপন্ন হন। মামলা দায়েরের পরদিন অর্থাৎ ১৯ অক্টোবর শুক্রবার এই মামলার বিরুদ্ধে আপীলের ফলে আদালত ৩০ অক্টোবর মঙ্গলবার মামলার নতুন তারিখ ধার্য করেন।
এদিকে সোসাইটির নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় কমিউনিটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সচেতন প্রবাসীরা সোসাইটি নিয়ে মামলা-মোকদ্দার বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না এবং এতে সোসাইটি বড় অংকের বারতি খরচের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ২১ অক্টোবর রোববার বাংলাদেশ সোসাইটির দ্বি-বার্ষিক (২০১৯-২০২০) নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিলো। নির্বাচনে দু’টি প্যানেল সহ কার্যকরী পরিষদের ১৯টি পদে ৩৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। এজন্য নিউইয়র্কের ৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা সহ নির্বাচন কমিশন সকল প্রস্ততিও ছিলো।
সোসাইটির নির্বাচন বিষয়ে প্রথম আদালতের স্মরণপন্ন হন সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা ওসমান চৌধুরী। তিনি গত সেপ্টেম্বর মাসে কুইন্স সুপ্রীম কোর্টে একটি মামলা করেন (ইনডেক্স নং ৭৮৫০/২০১৮। ওসমান চৌধুরীর মামলা নিষ্পত্তি হতে না হতেই বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক ও নির্বাচন কমিশনের প্রধান এস এম জামাল ইউ আহমেদ এবং সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ-কে বিবাদী করে গত ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার কুইন্স সুপ্রীম কোর্টে মামলা করেন (ইনডেক্স নং ৭৮০৭/২০১৮) আলী আকবর, জিআর চৌধুরী ও শফিকুল ইসলাম নামের তিন সদস্য। এদের মধ্যে দুজন ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের সদস্য প্রার্থী ছিলেন, ত্রুটির কারণে যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিলো।
সোসাইটির নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ইতিমধ্যেই সোসাইটির ফান্ড থেকে ৬০ হাজার ডলারের মতো ব্যয় হয়ে বলে সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল ইউ আহমেদ জনি জানিয়েছেন।
সূত্র মতে, ৩০ অক্টোবর মঙ্গলবার আদালতের রায়ে কি হবে, না হবে তা নিয়ে নানানজন নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত ও মন্তব্য করছেন। মামলায় অভিযোগের পর দুই পক্ষের প্রমানপত্রাদি বিবেচনা করে আদালত কি সিদ্ধান্ত দেন বা নেন তারই উপর সোসাইটির নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। তবে নির্বাচনের পক্ষে সবাই মতামত ব্যক্ত করলেও এবং মাননীয় আদালত নির্বাচনের পক্ষে রায় দিলেও নতুন করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে কমপক্ষে দুই মাস সময় লাগবে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল ইউ আহমেদ জনি রোববার (২৮ অক্টোবর) এই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন। জনি বলেন, ২১ আক্টোবর রোববার নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ছিলো। এখন নতুন করে নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য ভোট কেন্দ্র নির্ধারন সহ অন্যান্য কাজ কাজ করতে কমপক্ষে দুই মাস সময় লাগবে। কারণ এখন নতুন করে চাইলেই সবকিছু ঠিকঠাক পাওয়া যাবে না। সবকিছু সমন্বয় করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জনি আরো বলেন, মাননীয় আদালত মঙ্গলবার কি রায় দেবেন সেটা আমরা জানিনা। তবে আমাদের সকল প্রস্তুতিই রয়েছে।
এদিকে সোসাইটির গঠনতন্ত্র মোতাবেক চলতি বছর অর্থাৎ আগামী ৩১ ডিসেম্বর সোসাইটির সদস্য/ভোটার এবং কার্যকরী পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে সোসাইটি নতুন সংকটে পড়তে পারে বলেও আশংকা করা হলেও আদালতের সিদ্ধান্তের উপর সব কিছু নির্ভর করছে সোসাইটির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এব্যাপারে সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, ৩০ জানুয়ারীর মধ্যে সোসাইটির নতুন কমিটির কাছে বিদায়ী কমিটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে বিশেষ প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতিতে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে আরো দুই সপ্তাহ সময় বর্ধিত করারও সুযোগ রয়েছে। তাই এখনই কিছু বলা সঠিক হবে না। আদালতের সিদ্ধান্তের উপরই সব কিছু নির্ভর করছে।
অপরদিকে নির্বাচন না হওয়ার পর্যন্ত ‘রব-রুহুল’ ও ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল সহ সকল প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আতদালতের সিধান্তের পর প্রার্থীরা নির্বাচনী সভা-সমাবেশ জোরদার করবেন বলে সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here