দাবি-দাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীতিগতভাবে একমত জানিয়ে যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী) বলেছেন, ‘এখন দেখার বিষয় হলো প্রধানমন্ত্রী যেগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেগুলো প্রতিপালিত হয় কি-না। তিনি আমাদের সামনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সরকার কথা রাখলে সংলাপ আশাবাদের দিকে যাচ্ছে।’
শুক্রবার গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপ শেষে রাতে তার বারিধারার বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

বি. চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের বেশিরভাগ দাবি-দাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যেসব দাবি তুলে ধরেছি প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন প্রার্থীদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ- সুবিধা নিশ্চিত করা আমাদের দাবির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী একমত পোষণ করেছেন। নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের অধীনে থাকবে না তফসিল ঘোষণার পর রাষ্ট্রপতির অধীনেই থাকবে। এসব ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো দ্বিমত নেই।

যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবির সঙ্গে একমত হয়েছেন যে, নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িতরা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই ন্যাস্ত থাকবে তফসিল ঘোষণার পর এমপিরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি যাতে না দিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রী রাজি হয়েছেন। তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করা হবে। প্রধানমন্ত্রী সরকারি দলের প্রার্থীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার ইত্যাদি প্রসঙ্গে বলেন, এসব অপসারণ করা হবে।

বি. চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার বা জাতীয় সরকার গঠন প্রসঙ্গে আমাদের দাবির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী একমত হননি। তবে তিনি বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ থাকবে।

নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সেনাবাহিনী উপজেলা পর্যায়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। কিন্তু আমরা ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার চেয়েছি সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী একমত হননি।

বি. চৌধুরী বলেন, ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা নেই। সেজন্য এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না বলে মনে করি। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে অধ্যাদেশ হয়ে গেছে। তবুও তিনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলবেন।

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক কারণে আটক বন্দিদের মুক্তি দেয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এ ব্যাপারে আমরা আগেই রাজি হয়েছি। এটা বাস্তব দাবি।

এর আগে, বি. চৌধুরীর নেতৃত্বে সন্ধ্যা ৬-৪০ মিনিটে বারিধারা থেকে গণভবনে উদ্দেশ্যে যুক্তফ্রন্ট নেতারা রওনা হয়ে ৭-২৪ মিনিটে গণভবনে পৌঁছেন।

সংবাদ সম্মেলনে যুক্তফ্রন্ট নেতা আবদুল মান্নান, শমসের মবিন চৌধুরী, জেবেল রহমান গানি, এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, মুহম্মদ ইউসুফ, মাহমুদা চৌধুরী, ওমর ফারুক, এইচ. এম গোলাম রেজা, নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, দেলোয়ার হোসেন, শেখ আসাদুজ্জামান, মাহবুব আলী, মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, দীলিপ কুমার দাস, হামদুল্লা আল মেহেদী, মজহারুল হক শাহ চৌধুরী, মো. মঞ্জুর হোসেইন ঈসা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here