জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ব্যাপারে সন্তুষ্ট নয়। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিবর্তে বিশ্বাসযোগ্য কাউকে চান। এ ছাড়া এখন থেকে ইসিকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করারও আহ্বান জানান।

আজ রোববার বেলা ২টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। কামাল হোসেন বলেন, ‘সিইসির সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আমাদের একটা দাবি হল ওনার পরিবর্তে একজন বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি হওয়া উচিত। উনিও বয়স্ক মানুষ, সিনিয়র অফিসার ছিলেন। আমি আবার বলছি যে আপনার ব্যাপারে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। কিন্তু আপনার কাজের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের মতো পরিবর্তন করতে পারিনি।’

সিইসিকে নিরপেক্ষ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘আগে যা-ই করেছেন, আজকে থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন।’ কাউকে ধরতে হলে কেন ধরা হচ্ছে সে ব্যাপারে সিইসিকে বিস্তারিত জানানোর জন্য বলেন। যাতে বোঝা যায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে যৌক্তিক কারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ধরপাকড় বন্ধ করার দাবি জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জেলখানা ভর্তি হয়ে গেছে। পাইকারিভাবে গ্রেপ্তার বন্ধ হওয়া দরকার।’

পুলিশের উদ্দেশ্য বলেন, পুলিশ সরকারের বাহিনী না। তারা রাষ্ট্রের বাহিনী। নির্বাচনের প্রার্থীরা যেন জনগণের কাছে যেতে পারে, নিজেদের কথা বলতে পারে, সে ব্যাপারে পুলিশের কাজ তাদের সাহায্য করা, বাধা দেওয়া নয়।

সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী নির্বাচনী পরিবেশ ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সেখানে তিনি তিনটি বিষয়ের কথা বলেন- ১. গণভবন, মন্ত্রীদের বাসভবন ও সরকারি অফিস রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কিন্তু ইসি এখানে নীরব ভূমিকা পালন করছে। ২. আইন বহির্ভূতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিরোধী পক্ষের ওপর মামলা, গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এসব হচ্ছে এবং এতে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩. সরকারি দলের প্রার্থীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সহায়তায় প্রচারকাজ করছে। কিন্তু বিরোধীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি গণফোরামে যোগ দেওয়া আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এস এম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত সাড়ে নয় বছরে দেশের শাসন ব্যবস্থার যে অবস্থা হয়েছে তার সঙ্গে স্বাধীনতার আদর্শের সম্পর্ক কম। ধানের শীষ প্রতীকে তাঁর নির্বাচন করার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এই প্রতীক মাওলানা ভাসানী ও ন্যাপের প্রতীক ছিল।
আরেক যোগদানকারী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মেজর জেনারেল (অব) আমসা আমীন বলেন, ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে নির্বাচন করে তিনি নিজ এলাকার জন্য কাজ করতে চান। একুশে টেলিভিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালাম আজ গণফোরামের যোগ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুরসহ প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here