বাংলা খবর:
মাইমুনা মেহজাবিন। সাড়ে ৩ বছর বয়স। সারাবাড়ি ছুটোছুটি। সকাল থেকে রাত অবধি। মুখে কথার ফুলঝুড়ি। বাড়ির সবাইকে মাতিয়ে রাখতো। এইতো মাত্র চারদিন আগের কথা। ঠোটে লিপষ্টিক, কপালে টিপ লাগিয়ে ছবি তুললো। প্রবাসী বাবাকে ছবিটা পাঠিয়ে ফোনে বললো, ‘বাবা দেখোতো আমাকে কেমন লাগছে?’ এভাবে ফোনে বাবাকে আর বলবেনা মেহজাবিন। তার দুষ্টমিভরা চোখের নাচন আর মিষ্টি কথা শোনা যাবেনা। চিরবিদায় নিলো ছোট্ট এ শিশুটি।
ফরিদপুরে নিজ বাসায় সোমবার অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার ডাক্তাররা তাকে দ্রুত ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেয়া হলে প্রথমে কেবিন এবং পরে আইসিইউতে নেয়া হয়। দ্রুত তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। নিউমোনিয়াজনিত অসুখে আক্রান্ত শিশুটিকে শেষ পর্যন্ত লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ডাক্তারদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে, মঙ্গলবার রাতে মেহজাবিন সুন্দর এ পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। বুধবার বিকেলে জানাজা শেষে ফরিদপুরে তাকে দাফন করা হয়।
পিতা মামুনকে পাঠানো মেহজাবিনের আগের ছবি
মেহজাবিন নিউইয়র্ক প্রবাসী সিনিয়র ক্যামেরাপারসন টিএম মামুনের কন্যা। মামুন ঢাকায় চ্যানেল আই, চ্যানেল ওয়ান, চ্যানেল ২৪ সহ বিভিন্ন টেলিভিশনে সিনিয়র ক্যামেরাপারসন হিসেবে কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সময় টিভিতে কর্মরত ছিলেন।
মামুন নিউইয়র্কে যাওয়ার আড়াই মাস আগে মেয়েটির জন্ম হয়। তার মেঝো মেয়েও মারা যায় ঠিক সাড়ে তিন বছর বয়সে। চিকিৎসকরা বলেছে, ছোট মেয়েটির ব্রেইনে ঠান্ডা লেগেছিল। আর মেঝো মেয়েটি মারা গিয়েছিল হৃদরোগজনিত কারনে।
মেয়ের মৃত্যুর সংবাদে নির্বাক পিতা মামুন। তাঁকে শান্তনা দিতে নিউইয়র্কে অবস্থানরত ঢাকা থেকে আসা সহকর্মী, সিনিয়র সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও বন্ধুরা তার নিউইয়র্ক এর উডসাইড এলাকার বাসায় ছুটে যান। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন মেহজাবিন এর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।