একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৩২ জন পর্যবেক্ষক পাঠাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে মিলার এ কথা বলেন। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার বলেছেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তার দেশ প্রত্যাশা করেছে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন, আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য তার দেশ ৩২ জন পর্যবেক্ষক পাঠাবে। তিনি জানান, মার্কিন দূতাবাসের ১১টা দল নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তার দলের সংগ্রামের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্বে তার সরকার তখনকার বিরোধী দলকে নির্বাচনকালীন সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল কিন্তু তারা তা গ্রহণ না করে দেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং মানুষ হত্যা করেছে।
তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা হচ্ছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অভিযোগ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান নির্বাচনকালীন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে তার দলেরও দুইজন কর্মী প্রাণ হারিয়েছে। এ বিষয়ে আমি আমার দলের নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছি।
রোহিঙ্গা সদস্যদের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, এসব রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারের এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত যাতে করে তারা নিরাপদে তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ‘শক্তিশালী’ আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দুই পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতাকে জ্বালানি এবং এবং শিক্ষাখাতে আরো বৃদ্ধি করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বাংলাদেশের বিমানের সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালুর জন্য রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
শিক্ষা খাতের উন্নয়নে তার সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করছে।
দেশের অর্থনৈতিব উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যদি আমাদের সরকার ভোটে জয়লাভ করে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে আমাদের লক্ষ্য রয়েছে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে আগামী অর্থবছরে ৮ শতাংশে উন্নীত করার।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।