আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে থাকবে র‌্যাবের ১০ হাজার সদস্য। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৈরি করা হয়েছে ৫৭টি ক্যাম্প। দেশের কোথাও যদি কেউ সহিংসতা করে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে র‌্যাবের থাকছে চারটি হেলিকপ্টার। এছাড়া নির্বাচনকেন্দ্রিক গুজব ঠেকাতে ‘র‌্যাব-সাইবার নিউজ ভেরিফিকেশন সেন্টার’ নামে একটি ফেসবুক পেজ চালু করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত জাতীয় নির্বাচনের নিরাপত্তা বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচনকে সফল করতে গত এক বছর ধরেই কাজ করছে র‌্যাব। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং জঙ্গি হুমকির আশঙ্কায় নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্বপালন করে নির্বাচনের একটা ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করেছি। সাইবার ওয়ার্ল্ডে একটি গোষ্ঠী মিথ্যা তথ্য প্রচারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তারা এসব গুজব প্রচারে কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। গত দুই মাস বা আরও বেশি সময় ধরে এসব গুজব প্রতিরোধে র‌্যাব সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

র‌্যাবের প্রধান বলেন, ‘আজ থেকে ‘র‌্যাব-সাইবার নিউজ ভেরিফিকেশন সেন্টার’ নামে একটি ফেসবুক পেজ চালু করা হয়েছে। সাইবার ওয়ার্ল্ডের যে কোনো নিউজ, তথ্য, ভিডিও সম্পর্কে সন্দিহান হলে কেউ যদি ওই পেজে যোগাযোগ করে, তাহলে দ্রুততার সঙ্গে আমরা যাচাই করে ফিডব্যাক দেব। একটি টিম সার্বক্ষণিক এই দায়িত্বপালন করবে। যে কোনো তথ্যের মাধ্যমে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করা হলে তা প্রতিরোধে র‌্যাব তৎপর রয়েছে।’

বেনজীর আহমেদ বলেন, সারা দেশে র‌্যাবের ৫৭টি ক্যাম্প করা হয়েছে। কাজ করছে র‌্যাবের ১০ হাজার সদস্য। দেশের যে কোনো প্রান্তে যে কোনো ধরনের সহিংসতা বা অন্য জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে র‌্যাবের ২ হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হবে। নির্বাচন কমিশন থেকে ইতিমধ্যে দুটি হেলিকপ্টার ব্যবহারের অনুমতি নেয়া হয়েছে। এছাড়াও সেনাবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার স্ট্যান্ডবাই হিসেবে থাকবে। র‌্যাবের একটি স্পেশাল বাহিনী রয়েছে। প্রয়োজনে তারাও দেশের যে কোনো প্রান্তে ছুটে যাবে।

তিনি বলেন, এছাড়া আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কোথাও ধ্বংসাত্মক কোনো ঘটনা ঘটলে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য থাকলে অথবা গ্রাম বা শহরে যে কোনো জায়গায় অপরিচিত কাউকে দেখলে র‌্যাবকে জানানোর অনুরোধ জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, সমগ্র জাতি উন্মুখ হয়ে বসে আছে নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য র‌্যাব এক বছর ধরে কাজ করছে। এ কাজে ব্যাপক হুমকি ও চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে এক বছরে অবৈধ অস্ত্র ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করি। কালোটাকার বিরুদ্ধেও আমরা অভিযান শুরু করেছি।

র‌্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, নির্বাচনে দায়িত্বপালনের জন্য র‌্যাবের সব ধরনের প্রশাসনিক প্রস্তুতি রয়েছে। সবাইকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী র‌্যাবদের মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। রিটার্নিং অফিসার বললে র‌্যাব সে অনুযায়ী কাজ করবে। কোনো বাহিনীর পরিচয়ে কেউ যদি কারও কাছ থেকে টাকা চায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাবকে জানানোর অনুরোধ জানান তিনি।

নির্বাচনে হামলার হুমকি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সব হুমকির বিরুদ্ধে প্রস্তুত থাকতে চাই, যাতে করে কেউ আমাদের সারপ্রাইজ করতে না পারে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব আপনারা আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের ওপর আশ্বস্ত হতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here