কার্যকর বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালনের ঘোষণা দেওয়া জাতীয় পার্টি সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে যায়নি। দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, সদ্য বিলুপ্ত সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা কেউ যাননি বঙ্গভবনের শপথ অনুষ্ঠানে।

সোমবার বঙ্গভবনে মন্ত্রিসভার শপথের দিন আওয়ামী লীগের শরিক দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেবল ময়মনসিংহ-৮ আসনের ফখরুল ইমাম।

শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা নিশ্চিত করেছেন মশিউর রহমান রাঙ্গা। অনুষ্ঠানের দুই দিন আগে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয় দলটির কাছে। তবে দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বঙ্গভবনে যাওয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ দেখিয়েছেন।

জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, তিনি মন্ত্রিসভায় আমন্ত্রণ পাবেন বলে আশা করেছিলেন। যদিও তার দলের প্রধান এরশাদ জানিয়েছেন, তারা মন্ত্রিসভায় থাকছেন না, তার পরও এটি চূড়ান্ত নয় বলেই ধারণা ছিল তার।

গত পাঁচ বছরেও সংসদে বিরোধী দলে ছিল জাতীয় পার্টি। আবার মন্ত্রিসভাতেও ছিল তাদের প্রতিনিধি। এবার সরকারে না যাওয়ার বিষয়ে দলের বেশির ভাগ সংসদ সদস্যই চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। তাদের অনেকেরই ধারণা, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এরশাদ দলের স্বার্থের বিপরীতেই কাজ করেছেন।

জাতীয় পার্টির সভাপতিম-লীর এই সদস্য বলেন, ‘অধিকাংশ জ্যেষ্ঠ নেতাই এরশাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। তারা চেয়েছিলেন সরকারে থাকতে। নিদেনপক্ষে বিরোধী দলে গেলেও বিগত সরকারের মতো মন্ত্রিসভায় থাকতে চেয়েছিলেন। দলের মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ বেশির ভাগ জ্যেষ্ঠ নেতাই এ নিয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ।’

অসুস্থতার কারণে শপথের অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি এরশাদ। রাঙ্গাও দাবি করেছেন, তার শরীর ভালো নয়। না যাওয়ার জন্য অন্যরাও দেখিয়েছেন নানা কারণ।

রাঙ্গা বলেন, ‘শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়ার চিঠি পেয়েছিলাম আমরা। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি যেতে পারিনি। অন্যরা কেন যাননি, সেটা তারা বলতে পারবেন। আমার জানামতে দলের চেয়ারম্যান, কো-চেয়ারম্যানও যাননি শপথ অনুষ্ঠানে। দলের কেউ অনুষ্ঠানে গেছেন কি না আমার জানা নেই।’

জাতীয় পার্টির সভাপতিম-লীর সদস্য এস এম ফয়সল চিশতি বলেন, ‘স্যার (এরশাদ) সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি।…আমার মেয়ে দেশের বাইরে যাবে। তাই আমি এদিকে সময় দিয়েছি।’

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২টি আসনে জয়লাভ করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। জাতীয় পার্টি সরকারে না বিরোধী দলেÑএ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে দলটির চেয়ারম্যান এরশাদ ঘোষণা দেন, তারা সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকবে।

সুত্র: –ঢাকাটাইমস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here