একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর গণভবনে রাজনীতিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রের কঠোর সমালোচনা করেছে বিএনপি।

শনিবার গণভবনে ওই আয়োজনকে ‘সামাজিক পাপ’ হিসেবে উল্লেখ করে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতন্ত্রমনা কেউ ওই আয়োজনে যে যায়নি, তাতেই জনগণের বিজয় হয়েছে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব রাজনীতিকের সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন তাদের সঙ্গে শনিবার গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো গণভবনে যায়নি। তারা চা-চক্রে অংশ না নেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল।

দলের নয়া পল্টন কার্যালয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “বাংলাদশ এখন গণতন্ত্রশূণ্য। রাষ্ট্র এখন এক ব্যক্তি ও দলের কব্জায় । গতকাল গণভবনে নির্বাচন পরবর্তি চা-চক্রে শেখ হাসিনার সদাহাস্য চেহারা ও সরকারের আনুকূল্য পাওয়া উৎফুল্ল উচ্ছিষ্ট রাজনীতিবিদদের চেহারা দেখে আমার মনে হয়েছে তারা আনন্দে মেতে উঠেছে।

“মহা ভোট ডাকাতির পর অনুশোচনাহীন সরকারের চা-চক্রের এই আনন্দায়োজন দেখে মহাত্মা গান্ধীর বিখ্যাত একটি উক্তি মনে পড়ল। সেটি হলো ‘প্লেজার উইদাউট কনসাইয়েন্স’ অর্থাৎ বিবেকহীন আনন্দ। এই আনন্দ একটি সামাজিক পাপ।”

রিজভী বলেন, “গোটা জাতির সাথে নির্লজ্জ মহা তামাশার নির্বাচনের পর উল্লসিত সরকারের চা-চক্রের আয়োজন বিবেকহীন আনন্দের সমতুল্য। জনগণের সাথে প্রতারণাকারী সরকারের এই চা-চক্রে দেশের গণতন্ত্রমনা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশগ্রহণরত কোনো রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি।

“যারা জনগণের ভোট লুট করেছে তাদের সাথে গণতন্ত্রপ্রেমী কোনো ব্যক্তি, দল, গোষ্ঠি কেউই সেই লুটের আনন্দের পাপে অংশগ্রহণ করেনি। এটাই জনগণের বিজয়।”

ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘মহা ভোট ডাকাতি’ হবে বলে সংশয় প্রকাশ করেন রিজভী।

“মহাভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর ভুয়া ভোটের সরকারের অনুগত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। দুদর্শাগ্রস্ত গণতন্ত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কতটুকু সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে এ নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে।

আগামী ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের দিন ঠিক হয়েছে। ১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলবে।

রিজভী বলেন, “ক্যাম্পাসে একদলীয় দুঃশাসনের প্রবল প্রতাপের অংশীদার বলেই এখন শিক্ষার উৎকর্ষতার চেয়ে চা-সিঙ্গারা-আলুর চপের উৎকর্ষতার বাণী শুনতে পাওয়া যায়। সুতরাং ডাকসু নির্বাচনে সব ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত না হলে এই নির্বাচন মহাভোট ডাকাতির নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় আরেকটি সংযোজন হবে।”

গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে দলের অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সিনিয়র সহসভাপতি প্রকৌশলী খালেদ মাহবুব শ্যামলের মা শামসুন্নাহার বেগম ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় মহাসচিবের শোক প্রকাশের কথা জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here