কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত ও হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।

আজ বুধবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তাদের এ সাক্ষাৎ হয়। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার কিছু পরে গণভবনে প্রবেশ করেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।

মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে ইউএনএইচসিআর’র বিশেষ দূত জনপ্রিয় হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নেতা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতা বর্তমানে পৃথিবীতে খুবই কম।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার কিছু পর গণভবনে আসেন ইউএনএইচসিআর’র বিশেষ দূত ও হলিউডের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। বৈঠক শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গণভবন থেকে বের হন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের উপর চাপ কমাতে ইউএনএইচসিআর এবং বিশ্ব ব্যাংক কাজ করছে। বলেন জোলি।

রোহিঙ্গা সংকটে ইউএনএইচসি আর সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানান অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটির সমাধান হতে হবে।

জোলি জানান, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় তিনি মিয়ানমারের নাগরিকদের উপর চালানো নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নির্যাতনের কাহিনী শুনেছেন।

এসময় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও তার বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে বলে হতাশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বিগত সময়ে তার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে বলেন, দুর্দশাগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছি। মিয়ানমারের এই রোহিঙ্গা নাগরিকদের উপর চালানো নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নির্যাতনের কথা শুনেছি।

এসময় অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বলেন, সম্প্রতি শুনেছি, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মেয়েদের তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে হত্যা করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির কথা তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সেখানে এ পর্যন্ত জন্ম নিয়েছে ৪০ হাজারের বেশি নতুন শিশু। রোহিঙ্গা শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন এবং ভাষানচরে তাদের অস্থায়ী পুনর্বাসনে সরকারি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নিজেদের গৃহবন্দি জীবনের কথাও তুলে ধরেন তিনি। এসময় অ্যাঞ্জেলিনা জোলি দুঃখপ্রকাশ করেন। সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here