ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বহরমপুর এলাকায় বেতনা সীমান্তে বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বিজিবির গুলিতে নিহত হয়েছে চারজন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকের এ ঘটনায় বিজিবি সদস্যসহ ১৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ১৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- ওই উপজেলার রুহিয়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব (৩৫), মৃত জহিরউদ্দীন ছেলে সাদেক (৪৫), বহরমপুর এলাকার নূর ইসলামের ছেলে জয়নুল (১২) ও আব্দুর রহিমের ছেলে সাদেকুল (৩২)। আহতরা হলেন- মিঠু, ইসহাদিতি, সাদেকুল, তৈমুর, রাসেল, জয়নুল, মুনতাহারা, বাবু, নওশাদ, হান্নান, জয়নুল ও নুর নাহার।
এলাকাবাসী জানায়, বরহমপুর গ্রামের মাহাবুব আলী ছয় মাস আগে চারটি গরু কেনেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি গরুগুলো বিক্রির জন্য স্থানীয় যাদুরানী বাজারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। এ সময় বেতনা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা ভারতীয় গরু মনে করে সেগুলো ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে মাহাবুবের পরিবার ও এলাকাবাসী বাঁধা দিতে গেলে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বিজিবি সদস্যরা গুলি ছুড়লে চারজন নিহত হয়। এ ঘটনায় ১২ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৬ জন আহত হয়।
হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আব্দুস সামাদ চৌধুরী বলেন, গুলিবিদ্ধ ১৪ জনের গুলি বের করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার মোহা. মনিরুজ্জামান বলেন, বিজিবি ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিজিবি সদস্যরা গুলি ছুড়লে তারা নিহত হয়। লাশ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
হরিপুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবি ক্যাম্পের অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, বিজিবির একটি টিম চারটি গরু সিজ করে ফেরার পথে চোরাকারবারীরা এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্রসহ বিজিবির ওপর হামলা চালায়। তাদের অনুরোধ করেও কোনো কাজনি। বরং তারা উত্তেজিত হয়ে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বিজিবির চার সদস্য আহত হয়। এ সময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেও পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গুলি ছোড়া হয়।